গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন আমদানি কমিয়েছে চীন। মূলত তেলবীজটি মাড়াইয়ের মাধ্যমে পশুখাদ্য উৎপাদন কমে যাওয়ায় চাহিদায় ভাটা পড়ে। এ কারণেই আমদানি নিম্নমুখী ছিল। সম্প্রতি দেশটির শুল্ক বিভাগ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
চীন বিশ্বের শীর্ষ সয়াবিন আমদানিকারক দেশ। জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমসের প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে, মার্চে চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩৩ লাখ ৭০ হাজার টন সয়াবিন আমদানি করে। গত বছরের একই সময় আমদানির পরিমাণ ছিল ৭১ লাখ ৮০ হাজার টন।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, বছরের শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন আমদানি ছিল নিম্নমুখী। প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩০ শতাংশ কমেছে। আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৩৪ লাখ টনে।
২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এ চুক্তির আওতায় দেশটি থেকে গত বছর সয়াবিনসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য আমদানি বাড়ায় চীন। এটি গত বছর সয়াবিন আমদানি বাড়াতে সয়াহতা করেছে।
সাধারণত চীনে সবচেয়ে বেশি সয়াবিন সরবরাহ করে ব্রাজিল। কিন্তু গত বছর বৃষ্টিপাতের কারণে দেশটিতে সয়াবিন উৎপাদন ও রফতানি—দুইই কমে যায়। বিকল্প হিসেবে গত বছরের মার্চে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ব্যাপক পরিমাণ সয়াবিন ক্রয় করে চীন।
সাম্প্রতিক তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের মার্চে চীন ব্রাজিল থেকে ২৮ লাখ ৭০ হাজার টন সয়াবিন আমদানি করেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি বেড়ে ৩ লাখ ১৫ হাজার ৩৩৪ টনে উন্নীত হয়েছে।
এছাড়া চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্রাজিল থেকে ৬৩ লাখ ৭০ হাজার টন সয়াবিন কিনেছে চীন। গত বছরের একই সময় আমদানি করা হয় ১৩ লাখ ৫০ হাজার টন। সে হিসেবে আমদানি ৩৭০ শতাংশ বেড়েছে।
গত বছর হারিকেন আইডার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের রফতানি সংকুচিত হয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে দেশটি থেকে আমদানি কমিয়ে দেয় চীন। পরিবর্তে ব্রাজিলে নতুন শস্যের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। কিন্তু ঠিক তখনই দেশটি ভয়াবহ খরার সম্মুখীন হয়। এতে ব্রাজিলে উৎপাদন কমতে শুরু করে। অন্যদিকে রফতানিতে বিলম্ব দেখা দেয়। ব্রাজিলের কার্গোর দাম বেড়ে যাওয়ায় আবারো যুক্তরাষ্ট্রের দিকে মুখ ফিরিয়ে নেয় চীন।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দামের সুবিধার কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরো সয়াবিন আমদানি হতে পারে। তবে গত বছরের তুলনায় আমদানি বাড়ার সম্ভাবনা কম। কারণ বর্তমানে চীনের বাজারে সয়াবিনের চাহিদা অত্যন্ত দুর্বল।