হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থীদের বিক্ষোভকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্রের আইনের পাল্টা জবাব দিয়েছে চীন। হংকংয়ে মার্কিন সামরিক উপস্থিতির ওপর কড়াকড়ির পাশাপাশি কয়েকটি মার্কিন এনজিওর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বেইজিং।
সোমবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক ঘোষণায় বলেছে, ‘এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সামরিক জাহাজ এবং বিমান হংকংয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।’ খবর এএফপির।
প্রায় ছয় মাস ধরে চলমান হংকং বিক্ষোভ। শুরু থেকেই এই বিক্ষোভের সমর্থন দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো। গত সপ্তাহে (২৮ নভেম্বর) বিক্ষোভের সমর্থনে করা একটি বিলে স্বাক্ষর করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এরপরই এর বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানায় চীন। পাল্টা জবাবে আইনের খসড়া প্রণয়নকারীদেরকে চীনা মূল ভূখণ্ডসহ হংকং এবং ম্যাকাউয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধের তালিকায় রাখার ইঙ্গিতও তখনই দিয়েছিল চীন। সে মতোই এবার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিল দেশটি।
স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে বছরে একবার হংকং পরিদর্শনে যায় যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর জাহাজ। তবে সীমান্ত নিয়ে উত্তেজনার কারণে মাঝে মাঝে মার্কিন রণতরী হংকংয়ে ভিড়তে দেয় না চীন।
চলতি বছরের আগস্টে তাদের নৌবাহিনীর দুটো জাহাজ ফিরিয়ে দেয়া হয়। সেপ্টেম্বরেও মার্কিন একটি রণতরীকে হংকংয়ে ঢুকতে দেয়নি চীন। এপ্রিলে হংকংয়ে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহরের ইউএসএস ব্লু রিজ উভচর কমান্ড শিপ। জুনে হংকংয়ে বিক্ষোভ শুরুর আগে এটিই ছিল সেখানে যাওয়া মার্কিন নৌবাহিনীর সর্বশেষ জাহাজ।
এবার চীন বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের নৌজাহাজ এবং বিমানের হংকংয়ে প্রবেশের অনুরোধই বিবেচনা করবে না। দরকার পড়লে বাড়তি আরও পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও শাসিয়েছে বেইজিং।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক যেসব এনজিওর ওপর চীন নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ), ফ্রিডম হাউজ, দ্য ন্যাশনাল এন্ডওমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি, দ্য ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইন্সটিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স এবং ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইন্সটিটিউট।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিয়াং বলেছেন, হংকংয়ের বিক্ষোভকারীদেরকে সমর্থন দেয়ার জন্য ওই সংগঠনগুলোকে মূল্য দিতে হবে। হংকংয়ের বিক্ষোভে তাদেরও কিছু দায় আছে। সেকারণেই তাদের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা।
বেইজিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে হুয়া আরও বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের ভুল সংশোধন করে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। হংকংয়ের স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধিসহ চীনের সার্বভৌমত্ব সমুন্নত রাখতে বেইজিং প্রয়োজনে আরও পদক্ষেপ নিতে পিছপা হবে না।’