জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) তিনজন হিন্দু ছাত্রকে শিবির সন্দেহে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। মারধরের শিকার তিন হিন্দু ছাত্র হলেন- প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের সুদীপ্ত দে, একই ব্যাচের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অমর্ত্য রায় ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শৌমিক বাগচী।
বুধবার (৬ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংহতি সমাবেশে বক্তারা এসব কথা জানান।
হামলায় আহত তিন ছাত্র হিন্দু ধর্মাবলম্বী। এদের মধ্যে সুদীপ্ত দে শাখা ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক এবং শৌমিক বাগচী জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক। আর অর্মত্য রায় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
এছাড়া আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের নবীন ও ইংরেজি বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের অনিন্দ্য নামে দুজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকেও ‘শিবির’ বলে পিটিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
হামলার বর্ণনা দিয়ে সুদীপ্ত দে বলেন, ছাত্রফ্রন্টের জাবি শাখার সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে ‘শিবির-শিবির’ বলে আমাকেও তারা মারধর শুরু করে । আমাদের শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক আন্দোলনকে বন্ধ করার অপচেষ্টা হিসেবে উপাচার্যের মদদে ছাত্রলীগ এই হামলা করেছে।
সৌমিক বাগচি বলেন, তারা আমাকে লক্ষ করে বলতে থাকে এ শিবির করে। তারপর আমরা উপর চড়াও হয়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে।
হামলায় আহত অমর্ত্য রায় বলেন, ‘ও শিবির, ওরে মার’ এই কথা বলেই আমার ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। তাদের একজন আমার শার্টের কলার ধরেছিল, তখনই আরেকজন আমাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়।
এ বিষয়ে আন্দোলনের মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, শিবির ট্যাগ দিয়ে আন্দোলন দমানো পুরোনো কৌশল। যৌক্তিক এই আন্দোলন দমাতে প্রশাসন ও ছাত্রলীগ আন্দোলনকারীদেরকে ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করছেন। কিন্তু আমরা শিক্ষক, সাংস্কৃতিক জোট, প্রগতিশীল ছাত্রজোট মিলে আন্দোলন পরিচালনা করছি। এখানে শিবিরের কোন ঠাই নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করার সময় মঙ্গলবার ছাত্রলীগের হামলায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং সাংবাদিকসহ ৩৫ জন আহত হন। ওই হামলার সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তিনজন হিন্দু ছাত্রকে শিবির আখ্যা দিয়ে পিটিয়েছে। ছাত্রলীগের পক্ষ নিয়ে ভিসি ফারজানা ইসলাম আন্দোলনরতদের ‘জামায়াত শিবির ও বিএনপি’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।