শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের তালিকাভুক্তির পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের দ্রুত তারিখ নির্ধারণ ও খাতা মূল্যায়নে আধুনিক প্রযুক্তি ও এমআর সংযোজনের দাবিতে আমরণ অনশন পালন করছেন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা।
রবিবার রাত থেকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে চলা এই অনশন কর্মসূচি সোমবার এখনো চলছে।
শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৩ বছর আগে শেষ এই তালিকাভুক্তির পরীক্ষা নেওয়া হয়। এ বছর রেজিস্ট্রেশন, এনরোলমেন্ট এবং আরো বেশ কিছু খাত দেখিয়ে প্রত্যেক শিক্ষানবিশ আইনজীবী পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে রাখা হয় ৮ হাজার টাকা করে, যা বাংলাদেশের যেকোনো চাকরির পরীক্ষার তুলনায় অনেক বেশি।
গত অক্টোবর মাসের ৩ তারিখ রেজিস্ট্রেশনের শেষ দিন ছিলো। রেজিস্ট্রেশনের জন্য সময় বেঁধে দিলেও পরীক্ষার দিন এখনো জানায়নি বার কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে একটি ভুয়া বিজ্ঞপ্তি দেখে এই পরীক্ষার্থীরা আকৃষ্ট হয়ে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানায় এপ্রিলের দিকে পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে।
আন্দোলনকারীরা বলেন, এখানে এমন অনেকেই আছেন যারা ৫-৬ বছর আগে এলএলবি শেষ করেছেন কিন্তু এখনো বার কাউন্সিলের সদস্য হতে পারেননি। প্রতি বছর পরীক্ষা নেওয়ার কথা থাকলেও তা মানছে না বার কাউন্সিল।
‘বাংলাদেশ বার কাউন্সিল বনাম ফজলুল কামের এবং অন্যান্য’ মামলায় (২০১৭) আদালত জানায়, ‘এটা দৃশ্যমান যে, বার কাউন্সিল তার দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ। আইনজীবী নিবন্ধন পরীক্ষাটি যথাযথভাবে সম্পাদন করতে পারছে না। বার কাউন্সিল প্রতি বছরে একবার পরীক্ষা গ্রহণ করতে পারছে না।’ আপিল বিভাগ এই মামলায় নির্দেশনা প্রদান করে যে, ‘বার কাউন্সিল জেলা আদালতগুলোতে আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধন লাভ করতে ইচ্ছুকদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া প্রতি ক্যালেন্ডার বছরে সম্পন্ন করবে।’
কিন্তু আদালতের সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়নি বাংলাদেশ বার কাউন্সিল। এ প্রসঙ্গ টেনে আন্দোলনকারীরা বলেন, সারা দেশে প্রায় ৭০ হাজার আইন বিভাগ থেকে পাস করা শিক্ষার্থী তাদের নিবন্ধনের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছেন। আর সে কারণেই এই জটের সৃষ্টি হচ্ছে। ৩ বছর ব্যবধানে পরীক্ষা নিলে এই ব্যবধান সামনে জ্যামিতিক হারে বাড়বে।
আন্দোলনকারীরা বলেন, আমরা এলএলবি অনার্স সম্পন্ন করে বার কাউন্সিলের নিয়মকানুন মেনে জেলা জজ আদালতে শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে কাজ করছি। এছাড়া সার্বিক পরিস্থিতি ও অপূরণীয় ক্ষতির কথা বিবেচনা করে দ্রুত পরীক্ষা গ্রহণের আহ্বান জানান তারা।
বাংলাদেশ শিক্ষানবিশ আইনজীবী কল্যাণ পরিষদের ব্যানারে মানববন্ধন থেকে তারাও দাবি জানান, বার কাউন্সিলে শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা হোক।