বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, বাংলাদেশে আগামী দিনে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সে সক্ষমতা অর্জনে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। তিনি বলেন, শুধু অন্যের প্রযুক্তি গ্রহণ করা নয়, আমরা এখন প্রযুক্তির পরবর্তী প্রজন্মের নেতা হতে চাই। পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তির উত্কর্ষ সাধন করতে চাই।

১১ নভেম্বর রাতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে প্রযুক্তি খাতের বিশ্ব সম্মেলন ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলজি ২০২১ উপলক্ষে ‘এনসিউরিং অ্যান ইনক্লুসিভ, ট্রাস্টেড অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডিজিটাল সোসাইটি’ শীর্ষক মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে’ ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে কী নোট স্পিকারের বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে সেমিনারে সরাসরি প্যানেলে অংশগ্রহণ করে বক্তব্য রাখেন সোমালিয়ার যোগাযোগ ও প্রযুক্তিমন্ত্রী আদ্রিস শেখ আহমেদ এবং মালদ্বীপের জলবায়ু ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ শরীফ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এটুআইয়ের পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী।

এছাড়াও ভার্চুয়ালি প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন ঘানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক সি এস অ্যান্থনি, ফিলিপাইনের স্থানীয় সরকারমন্ত্রী নাগিব সিনারিম্বো ও উইটসা মহাসচিব জেমস পয়স্যান্ট।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ব্লক চেইন, আইওটি, ন্যানো টেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি, রোবোটিকস, মাইক্রোপ্রসেসর ডিজাইনের মতো ক্ষেত্রগুলোতে জোর দেয়া হচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রথম লক্ষ্য হলো একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ডিজিটাল সমাজ গড়ে তোলার মাধ্যমে এর সুফল বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেয়া।

প্রযুক্তি দ্রুত এগিয়ে চলেছে উল্লেখ করে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আগামী দিনের নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পাশাপাশি সহযোগী হতে হবে। সমস্যার সমাধান ও উদ্ভাবনের পথে একযোগে কাজ করতে হবে, তাহলেই এগিয়ে যাওয়া সহজ হবে।

বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে দেশে ৩৯টি হাই-টেক পার্ক করা হয়েছে। এসব পার্কে বিনিয়োগে কর অব্যাহতি, বিদেশীদের জন্য শতভাগ মালিকানার নিশ্চয়তা, আয়কর অব্যাহতিসহ নানা সুযোগ রাখা হয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য অনেক ধরনের সুবিধা দেয়া হয়েছে। যারা কারখানা স্থাপন বা তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগে তৈরি অবকাঠামো সুবিধা নিতে চান, তারা এখানে বিনিয়োগ করতে পারেন।

বর্তমানে স্যামসাংসহ কয়েকটি কোম্পানি বাংলাদেশে পণ্য উৎপাদন শুরু করেছে জানিয়ে জয় বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অষ্টম কনজিউমার মার্কেট, এখানে বিশাল মধ্যবিত্ত শ্রেণী রয়েছে। এখানে স্টার্টআপদের জন্য বিশাল সুযোগ রয়েছে।

মহামারীকালে বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে গেছে মন্তব্য করে জয় বলেন, মোবাইল ইন্টারনেট, ই-কমার্স, ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের প্রসার বেড়েছে মহামারীর এ সময়ে।

বৈঠকের শুরুতে সভাপতির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক দেশের তথ্যপ্রযুক্তির অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই ব্যবহারের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আইসিটি সেক্টরের প্রসারে আইটি সংযুক্ত পোর্টালগুলো নাগরিকদের সহজে সংযুক্ত হতে সাহায্য করছে। ২০২৫ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে।