বরিশালে ‘ত্রাণ ছিনতাই’

 

বরিশালের মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নে ‘ত্রাণ ছিনতাইয়ের‘ ঘটনা ঘটেছে। রোববার (১২ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে ইউনিয়নের রামারপোল গ্রামে চেয়ারম্যান জাপান সরদার ত্রাণ বিতরণ করতে গেলে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতার লোকজন সেগুলো ‘ছিনতাই করে‘। বিষয়টি নিয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে প্রশাসন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের একজন সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শুভ্রা দাসকে কল দিয়ে এলাকাবাসীর অসহায়ত্বের কথা জানান। এরপর তাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের জন্য ওই ব্যক্তির কাছে একটি তালিকা চান ইউএনও। পরবর্তীতে তাকে তালিকা দেয়া হলে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে তাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের নির্দেশ দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী রোববার সকালে চেয়ারম্যান ত্রাণ নিয়ে ওই এলাকায় পৌঁছান।

তারা আরও জানান, চেয়ারম্যান আসার পর তাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এসময় তার সঙ্গে একজন গ্রাম পুলিশ সদস্য ও দুইজন কর্মকর্তা ছিলেন। এরমধ্যে সেখানে লাঠিসোটা নিয়ে হাজির হন স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা জাকির ভূঁইয়ার সন্তান মানির, জোবায়ের ও নাঈম।

এসময় ওই তিনজন এসেই অকথ্য ভাষায় চেয়ারম্যানকে গালাগালি শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা জানতে চান, এই ত্রাণ সরকারি কিনা? চেয়ারম্যান হ্যাঁ সূচক জবাব দিলে তারা বলেন, এখানকার আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি জাকির ভূঁইয়া, তাকে না জানিয়ে কীসের ত্রাণ বিতরণ। এসময় সেখানে ত্রাণ নিতে যাওয়া লোকজনকে লাঠি দিয়ে ভয় দেখালে তারা পালিয়ে যান। পরবর্তীতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী জাকির ভূঁইয়া, সেতু ভূঁইয়া, বেল্লাল ভূঁইয়া ও বশির ভূঁইয়া সেখানে গিয়ে ত্রাণগুলো নিয়ে যান।

বিষয়টি স্বীকার করে চেয়ারম্যান জাপান সরদার বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশে আমি ত্রাণ নিয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু জাকির ভূঁইয়ার সন্তান মানির, জোবায়ের ও নাঈম এসে আমাদের উপর হামলা করে ত্রাণ নিয়ে যায়। কি পরিমাণ ত্রাণ নিয়ে যায় এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ১০ কেজি করে একেকটা প্যাকেট করা ছিলো, এমন ৪০টা প্যাকেট নিয়ে যায় জাকির ভূঁইয়ার লোকজন। এ বিষয়ে ইউএনও শুভ্রা দাস বলেন, আমি চেয়ারম্যানকে তালিকা দিয়ে ত্রাণ বিতরণের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলাম। তিনি আজ গিয়েছিলেন। তবে তালিকাভুক্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়নি।

‘ত্রাণ ছিনতাইয়ের‘ বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে তিনি বলেন, যাদের তালিকা রয়েছে তাদের কাছে দ্রুতই ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে বরিশালের জেলা প্রশাসক এস. এম. অজিয়র রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মন্তব্য করতে চাননি।