বনানীতে ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত পাঁচ আসামি হলেন সাফাত আহমেদ, সাদমান সাকিফ, নাঈম আশরাফ, বিল্লাল হোসেন ও
রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলার রায় আজ মঙ্গলবার হচ্ছে না। ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আফরোজা ফারহানা আহমেদ প্রথম আলোকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহারের আজ এ মামলার রায় ঘোষণার কথা ছিল। কিন্তু বিচারক অসুস্থ থাকায় আজ রায় হচ্ছে না বলে জানান ট্রাইব্যুনালের পিপি আফরোজা।
পিপি আফরোজা জানান, আজ এ মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু ট্রাইব্যুনালের বিচারক অসুস্থ। তাই তিনি আজ আদালতে আসেননি। ফলে আজ রায় হচ্ছে না। রায়ের জন্য ট্রাইব্যুনাল নতুন তারিখ ধার্য করবেন বলে জানান তিনি।
৩ অক্টোবর এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়। শুনানি শেষে মামলার রায় ঘোষণার জন্য ১২ অক্টোবর তারিখ ঠিক করেছিলেন আদালত। একই দিন এ মামলার পাঁচ আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়।
পিপি আফরোজা জানান, এ মামলায় ৪৭ সাক্ষীর মধ্যে ২১ জনকে আদালতে হাজির করে রাষ্ট্রপক্ষ। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা চাওয়া হয়।
২০১৭ সালের ২৮ মার্চ রাতে রেইনট্রি হোটেলে ডেকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া দুই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদ। তিনি আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে।
মামলার অপর চার আসামিরা হলেন সাফাতের বন্ধু সাদমান সাকিফ, নাঈম আশরাফ, সাফাতের দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন।
২০১৭ সালের ১৩ জুলাই মামলার প্রধান আসামি সাফাতসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, হোটেলে যাওয়ার পর সেখানে কোনো পার্টির পরিবেশ না দেখে বাদী ও তাঁর বান্ধবী চলে যেতে চান। কিন্তু সাফাত তাঁদের কেক কাটার পর যাওয়ার অনুরোধ করেন। সে সময় বাদী ও তাঁর বান্ধবী ছাড়া তাঁদের একজন চিকিৎসক বন্ধু ও তাঁর বান্ধবী ছিলেন। তাঁরা সবাই চলে যেতে চাইলে সাফাত ও নাঈম বাদীর চিকিৎসক বন্ধুকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ মারধর করে তাঁর গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নেন। তাঁদের (চিকিৎসক ও তাঁর বান্ধবী) একটি কক্ষে আটকে রেখে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলেন, ‘পালাবি না।’ এরপর সাফাত ও নাঈম বাদী ও তাঁর বান্ধবীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। গাড়িচালক বিল্লাল বাদীর চিকিৎসক বন্ধুকে মারধরের ভিডিও ধারণ করেন।
আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সাফাত জানান, বাদীর সঙ্গে জন্মদিনের সপ্তাহ দুয়েক আগে তাঁর পরিচয় হয় সাদমানের মাধ্যমে। দ্রুতই তাঁরা বন্ধু হয়ে ওঠেন। তিনি দাবি করেন, বাদীর পছন্দে তিনি রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিন পালনের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি দুটি কক্ষ বুকিং দিয়েছিলেন। ২৮ মার্চ রাতে তাঁরা মদ খেয়ে বেসামাল ছিলেন।
আসামি নাঈম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন।