ফের উৎপাদন ও বিপণন শুরু লাফার্জহোলসিমের

হাইকোর্ট থেকে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ পাওয়ার পর আবারো আন্তর্জাতিক মানের চুনাপাথর চিপ বা এগ্রিগেটসের বাণিজ্যিক উৎপাদন ও বিপণন শুরু করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের বহুজাতিক কোম্পানি লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে গতকাল এ তথ্য জানিয়েছে কোম্পানিটি।

লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ বলছে, এগ্রিগেটস ব্যবসা বন্ধের নির্দেশ দিয়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর লাফার্জহোলসিমকে চিঠি দেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। নির্দেশনা-সংক্রান্ত চিঠিটি তারা হাতে পায় ২০ সেপ্টেম্বর। ব্যবসা বন্ধের নির্দেশনার কারণ হিসেবে যেখানে বলা হয়, লাফার্জহোলসিম সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় অনুমোদন নেয়নি। এ চিঠি হাতে পাওয়ার পর পরই আইনি পদক্ষেপ নেয় কোম্পানিটি। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় তারা। গত মঙ্গলবার এ বিষয়ে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে শুনানি হয়। শুনানির পর কোম্পানিটির এগ্রিগেটসের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন আদালত। এ আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ফের এগ্রিগেটসের উৎপাদন ও বিপণন শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে কোম্পানিটি দাবি করে, এ ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে তারা কোনো আইন ভঙ্গ করেনি। তারা দেশের বিদ্যমান আইন মেনে ব্যবসা পরিচালনা করছে।

এ বছরের শুরুতে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মানের চুনাপাথর চিপ বা এগ্রিগেটসের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে। এসব চুনাপাথর চিপের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এগুলো ক্লিয়ার সাইজের ও গ্রেডেড চিপ। অর্থাৎ এসব চিপের সবগুলোর আকার ও আকৃতি একই, যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অর্জনের অন্যতম শর্ত। সুনামগঞ্জের ছাতকে অবস্থিত কোম্পানিটির ক্লিংকার ও সিমেন্ট উৎপাদন কারখানা প্রাঙ্গণেই এ চুনাপাথর চিপ ক্রাশিং ইউনিটটি স্থাপন করা হয়। ইউনিটটি বছরে ১২ লাখ টন কোণ আকৃতির চুনাপাথর চিপ উৎপাদন করতে সক্ষম। এ ইউনিট স্থাপনে কোম্পানিটির নিজস্ব তহবিল থেকে ৪০ কোটি ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।

চলতি ২০২১ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) ভালো ব্যবসা করেছে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ। মূলত সিমেন্ট ও চুনাপাথর চিপের ব্যবসা থেকে ভালো আয় হওয়ার কারণে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে। সব মিলিয়ে আলোচ্য সময়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। আর তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে ২৬ শতাংশ।

সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে লাফার্জহোলসিমের বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে বিক্রি ছিল ১ হাজার ১৪২ কোটি টাকা। তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৩০৯ কোটি টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা হয়েছিল ১৫০ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৬৬ পয়সা।

ডিএসইতে গতকাল লাফার্জহোলসিমের শেয়ারের সর্বশেষ ও সমাপনী দর ছিল ৮১ টাকা ৯০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির দর ৩৫ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১০৭ টাকা টাকা ৫০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।