ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের কার্যক্রম বন্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ

ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বীমার কার্যক্রম কেন সাময়িক স্থগিত করা হবে না- তার কারণ জানাতে সাত দিনের সময় দেয়া হয়েছে। পলিসির দাবির টাকা পরিশোধ না করে গ্রাহককে হয়রানি করায় ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে বীমা উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।

‘বীমা কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করা হবে না কেন’- তার কারণ ব্যাখ্যা করতে কোম্পানিটিকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। নির্দেশের পরও পলিসির দাবি পরিশোধ না করায় আইডিআরএ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে কারণ ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে।
জানতে চাইলে আইডিআরএ’র সদস্য বোরহান উদ্দিন আহমেদ বলেন, জবাব পেলে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষায় যেকোনো কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে আইডিআরএ। এক সপ্তাহ আগে নোটিশ দেয়া হলেও এখনও জবাব পাইনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে একটি মেরিন হাল পলিসি গ্রহণ করে দোভাষ শিপিং লাইন্স। ১৮ কোটি টাকার এ পলিসিটি গ্রহণের পর ২০১৫ সালের ২ মে বীমাকৃত জাহাজ এফ ভি অর চাইপিপত্তনা দুর্ঘটনার শিকার হয়। এরপরই সকল প্রকার আইনানুগ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের কাছে বীমা দাবি উত্থাপন করে দোভাষ শিপিং লাইন্স।

এদিকে দুর্ঘটনার পর ক্ষতি নিরূপনের জন্য বাংলাদেশ লয়েডস এর এজেন্ট জেএফ (বাংলাদেশ) লি. নামের সার্ভেয়ারর্সকে নিয়োগ প্রদান করে বীমা কোম্পানি ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স। সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে ৬ কোটি ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ক্ষতি নিরূপন করে প্রতিবেদন দাখিল করে সার্ভে প্রতিষ্ঠান। তবে জরিপ প্রতিবেদন দাখিলের পর দীর্ঘ দিন অতিক্রম হয়ে গেলেও বীমা দাবির টাকা পরিশোধ করেনি ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।

এ অবস্থায় বীমা দাবি পেতে ২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল আইডিআরএ’র কাছে ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করে দোভাষ শিপিং লাইন্স। অভিযোগের প্রেক্ষিতে কয়েক দফা শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ৮ মে ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সকে জরিপ প্রতিবেদন অনুসারে দাবি পরিশোধের নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। আদেশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে দাবি পরিশোধ করে তা আইডিআরএ’কে জানাতে বলা হয়। ব্যর্থতায় বীমা আইন অনুসারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুশিয়ারী দেয় কর্তৃপক্ষ।

ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে একটি ‘মেরিন হাল পলিসি’ গ্রহণ করে দোভাষ শিপিং লাইন্স। পলিসির মোট কাভারেজ (সীমা) ছিল ১৮ কোটি টাকা। পলিসিটি নেয়ার পর ২০১৫ সালের ২ মে জাহাজ এফভি অর চাইপিপত্তনা দুর্ঘটনার শিকার হয়।

এরপর সব ধরনের আইনানুগ আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বীমা দাবি উত্থাপন করে কোম্পানিটি। এদিকে, দুর্ঘটনার পর ক্ষতি নিরূপণের জন্য বাংলাদেশ লয়েডস’র এজেন্ট জেএফ (বাংলাদেশ) লিমিটেড নামের সার্ভেয়ার্সকে নিয়োগ দেয় ফিনিক্স। সব কিছু পর্যবেক্ষণ করে ছয় কোটি ৯৪ লাখ টাকা ক্ষতি নিরূপণ করে প্রতিবেদন জমা দেয় সার্ভে প্রতিষ্ঠানটি। তবে জরিপ প্রতিবেদন দাখিলের পর দীর্ঘদিন অতিক্রম হয়ে গেলেও বীমা দাবির টাকা পরিশোধ করেনি ফিনিক্স।

নিয়ম অনুসারে সার্ভে রিপোর্ট পাওয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যে টাকা দেয়ার কথা। এ অবস্থায় বীমা দাবি পেতে ২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল আইডিআরএ’র কাছে ফিনিক্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করে দোভাষ শিপিং লাইন্স। এরপর কয়েক দফা শুনানি শেষে চলতি বছরের ৮ মে ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সকে জরিপ প্রতিবেদন অনুসারে দাবি পরিশোধের নির্দেশ দেয় আইডিআরএ।

আদেশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে দাবি পরিশোধ করে তা আইডিআরএ’কে জানাতে বলা হয়। ব্যর্থতায় বীমা আইন অনুসারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি দেয়া হয়। তবে দাবি পরিশোধে আইডিআরএ’র নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করে বীমা কোম্পানিটি।

এরপর চলতি বছরের ১ আগস্ট রিভিউ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে রিভিউ খারিজ করে আগের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে আইডিআরএ। একই সঙ্গে সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু এরপর বীমা দাবি পরিশোধের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি ফিনিক্স। এছাড়া সন্তোষজনক ব্যাখ্যাও দিতে পারেনি ফিনিক্স। এটি বীমা আইন-২০১০ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে জানায় আইডিআরএ।

এরপর ১১ নভেম্বর ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বীমার কার্যক্রম কেন সাময়িক স্থগিত করা হবে না- তার কারণ জানাতে সাত দিনের সময় দেয়া হয়।

দোভাষ শিপিং লাইন্সের প্রোপাইটর মো. ফেরদৌস খান বলেন, এখনও দাবি পরিশোধ করেনি বীমা কোম্পানি। দেয়ার কথা বলে বারবার ঘোরানো হচ্ছে। কিন্তু এ বীমার বিপরীতে সাধারণ বীমা থেকে তারা ইতিমধ্যে টাকা পেয়েছেন।

এ বিষয়ে ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জামিরুল ইসলাম  বলেন, আইডিআরএ’র নোটিশ পেয়েছি। নোটিশের জবাবও দিয়েছি। তিনি বলেন, দেশের বাইরে আছি, আগামী সোমবার এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে পারব। ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন মোহাম্মদ শোয়েব এবং অন্যতম পরিচালক হিসেবে রয়েছেন দীন মোহাম্মদ।