ফারইস্ট ইসলামী লাইফের আত্মসাৎকৃত টাকা উদ্ধারের দাবিতে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গ্রাহকরা মানববন্ধন করেছেন। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ফারইস্ট লাইফের এএমডি আব্দুর রহিম ভুইয়ার সভাপতিত্বে অ মানববন্ধনে প্রধান অতিথি ছিলেন কোম্পানির ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম। এছাড়াও মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কোম্পানির সিএফও রুহুল আমিন খান, কোম্পানির ইভিপি মোজাম্মেল হক শাহীন, ইভিপি মোস্তফা জামান হামিদি, ইভিপি হামিদুর রহমান আজাদ, এসভিপি ও আইন কর্মকর্তা মো. জসীম উদ্দিন প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লি. বাংলাদেশের শীর্ষ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ছিল। দেশের আনাচে-কানাচে প্রতিটি মানুষের কাছে এ প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ছিল। প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয়েছিল দেশের লাখো বেকার যুবকের। সচ্ছল ও অসচ্ছল লাখ লাখ মানুষ ফারইস্টে বীমা করেছিল। স্বপ্ন দেখেছিল শেষ বয়সে এসে সুন্দরভাবে জীবন যাপন করার। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে পতিত আওয়ামী সরকারের দোসর গুটি কয়েক লোক। বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করে দেশের শীর্ষ বীমা কোম্পানিটিকে ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে নিয়ে গেছে।
এই অর্থ আত্মসাতের মূল হোতা ছিলেন- কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান এম এ খালেক এবং সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হেমায়েত উল্যাহ। এদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিল কোম্পানির সাবেক সেক্রেটারি আব্দুল আজিজ, হেড অব এইচ আর হেমায়েত উদ্দিন, হেড অব ব্যাংকিং আব্দুর রাজ্জাক, হেড অব অডিট কামাল হোসেন, হেড অব আইটি মাজেদুল ইসলাম ও সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের ব্যক্তিগত সহকারী আজহার উদ্দিনসহ আরও অনেকে। যাদের বিরুদ্ধে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে মামলা করা হয়েছে।
বক্তারা বলেন, নজরুল-খালেকগংদের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় বর্তমানে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লি. এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঠিকমতো বেতন ভাতা না পেয়ে চরম আর্থিক দৈন্যতায় ভুগছেন। একই সঙ্গে কোম্পানির সম্মানিত বীমা গ্রাহকরা তাদের ম্যাচুরিটি পাওয়া বীমার টাকার জন্য দিনের পর দিন ঘুরছেন। বিষয়টি কোম্পানির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ আন্তরিকভাবে অনুধাবন করলেও আর্থিক সংকটে থাকায় কিছুই করতে পারছেন না। কিছু গ্রাহককে তাদের বীমা দাবি পরিশোধ করা হলেও সকল গ্রাহকের বীমা দাবি পরিশোধ করা যাচ্ছে না। এদিকে মামলা চলামান থাকায় এবং টাকা উদ্ধার না হওয়ায় দিন দিন গ্রাহকদের মনে ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে। আর সে ক্ষোভের আগুনে ‘ঘি’ ঢালছেন টাকা আত্মসাতের মূল হোতা কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম। ফারইস্টকে নতুন করে ধ্বংস করার নীল নকশা আঁকছেন তিনি। তার এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে কাজ করছেন সাবেক অডিট ইনচার্জ কামাল হোসেন, নজরুলের ব্যক্তিগত সহকারী আজহার ও ফারইস্ট এর চাকরিচ্যুত কর্মচারী নুরুল্লাহ সিদ্দিকী। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে ফারইস্ট এর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বীমা গ্রাহকরা নজরুল-খালেকগংদের কাছ থেকে কোম্পানির আত্মসাৎকৃত টাকা উদ্ধার ও তাদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
একই সঙ্গে ফারইস্টের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআর), বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বক্তারা।