পূজামণ্ডপে কোরআন শরীফ রাখা ইকবালের বিচার চাইলেন মা

কুমিল্লার নানুয়াদিঘীর পাড়ে পূজামণ্ডপে হনুমানের পায়ের উপর কোরআন রাখার ঘটনায় সিসিটিভির ফুটেজে সন্দেহভাজন ব্যক্তিটি ইকবাল হোসেন তা নিশ্চিত করেছেন তার ভাই রায়হান। তিনি দাবি করছেন, তার ভাই ‘পাগল’। ইকবালের মা বিবি আমেনাও নিজের ছেলেকে নিয়ে বিব্রত। পূজামণ্ডপে কোরআন শরীফ রাখার কারণে ছেলের বিচার চাইলেন মা।

ইকবাল মানসিকভাবে অসুস্থ দাবি করে তার মা বিবি আমেনা বলেন, ‘বখাটেপনার কারণে গণপিটুনির শিকার হয়েছিল ইকবাল। এরপর থেকে তার আচরণে সবাই অতিষ্ঠ। ইকবালকে পেলে আপনারা বিচার করবেন। এই সন্তানের জন্য আমার পরিবারটা শেষ হয়ে গেছে।’

ইকবালের ছোটভাই রায়হান বলেন, ‘সিসিটিভির ফুটেজের এই মানুষ আমার ভাই। সে পাগল। ঘটনার এক সপ্তাহ আগে খেলার মাঠে তাকে নিয়ে ছেলেপুলেরা দুষ্টামি করায় সে সবাইকে জুতা দিয়ে মেরেছিল। তবে নেশা করে কিনা সেটা আমি জানি না। সে যে মানুষ মাকে পাথর নিয়ে মারতে চায় সে বুঝে শুনে এমন কাজ করার কথা না। ওকে চা-পানি, নাস্তা করালে যা বলবে তাই করবে।’

কুমিল্লা নগরীর সুজানগর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে ইকবালের পরিবার। ঘটনার পর থেকে ইকবালের বাবা পুলিশকে সহায়তা করছেন বলেও জানান ইকবালের মা বিবি আমেনা ও ভাই রায়হান।

শারদীয় দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমীর দিন গত বুধবার ভোরে কুমিল্লা শহরের নানুয়াদীঘির উত্তর পাড়ে দর্পণ সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ পাওয়া যায়। এরপর কোরআন শরীফ অবমাননার অভিযোগ তুলে ওই মণ্ডপে হামলা চালায় একদল লোক।

এ ঘটনার জের ধরে ওই দিন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা করতে যাওয়া একদল ব্যক্তির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। যেখানে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এরপর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ও রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতিতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধান করে ঘটনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমেই নেপথ্যে থাকা ‘মাস্টারমাইন্ড’দের শনাক্ত করা যাবে এমনটাই বিশ্বাস পুলিশের।