পাহাড়ি ঢল দেখতে গিয়ে বন্ধুসহ প্রাণ হারালেন রংপুর মেডিকেলের ছাত্র

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় নৌকা ডুবে দুই বন্ধু মারা গেছেন। আহত হয়েছেন তিনজন। শুক্রবার উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের দক্ষিণ দারিয়ারপাড়ের নলাডুবি বিলে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, মোশারফ হোসেন মিল্টন ও আমানুল্লাহ আমান। মিল্টন ধানশাইল ইউনিয়নের দক্ষিণ কান্দুলি গ্রামের সোহরাব আলীর ছেলে। তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। আমান একই গ্রামের সাদা মিয়ার ছেলে। তিনি তিনআনী আদর্শ সরকারি মহাবিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

স্থানীয়রা জানান, ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসেছিলেন মিল্টন। বেলা ১১টার দিকে বন্ধুদের সঙ্গে গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলেন মিল্টন ও আমান। পরে স্থানীয় দক্ষিণ দারিয়ারপাড়ের নলাডুবি বিলে পাহাড়ি ঢলের পানি দেখতে দুই নৌকায় ১২ থেকে ১৫ জন ঘুরতে যান। ঘোরাঘুরি শেষে দুপুরে বাড়ি ফেরার জন্য নৌকা ছাড়েন তারা। বিলের মাঝখানে আসার পর পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে নৌকা দুটি ডুবে যায়। মিল্টন ও আমান নৌকার নিচে আটকা পড়েন। তাদের ডাকে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে মিল্টন, আমান ও আবু সামাসহ পাঁচজনকে উদ্ধার করে শেরপুর জেলা হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর মিল্টন ও আমানকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তিনজন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরে মিল্টন ও আমানের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যান স্বজনরা।

দুই মেধাবীর মৃত্যুতে দক্ষিণ কান্দুলি গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিকেলে মিল্টনদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বুক চাপড়ে কাঁদছেন তাঁর বাবা সোহরাব আলী। তাঁর কান্না দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না স্বজন ও প্রতিবেশী। আহাজারি করতে করতে সোহরাব আলী বলেন, ‘মিল্টনকে নিয়ে কত স্বপ্ন দেখতাম। আমার ছেলে একদিন ডাক্তার হবে। দেশের মানুষের সেবা করবে। এলাকার মুখ উজ্জ্বল করবে। আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল!’

খবর পেয়ে মিল্টন ও আমানের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে তাদের বাড়িতে যান শেরপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য এডিএম শহিদুল ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, সমবেদনা জানানোর ভাষা নেই। এ ক্ষতি কোনোদিন পূরণ হওয়ার নয়। যতটুকু সম্ভব দুই পরিবারের পাশে থাকা হবে।

ঝিনাইগাতী থানার এসআই সাফায়াত হোসেন জানান, দুই শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়ে মরদেহ সুরতহাল করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফনের আবেদন করেছেন। অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়া পরে সম্পন্ন করা হবে।

এন এস