নান্দনিক ঢাকা গড়তে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা চাইলেন

ঢাকাকে অধিকতর নান্দনিক শহরে রূপান্তরের পাশাপাশি যোগাযোগ সহজীকরণের লক্ষ্যে একটি ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প গ্রহণে বিশ্বব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর পুনরুজ্জীবন ও সংস্কারের মাধ্যমে বিশ্বের অন্যতম সুপ্রাচীন ঐতিহাসিক শহর ঢাকা মহানগরীকে আরও অধিকতর নান্দনিক শহরের পাশাপাশি যোগাযোগ সহজীকরণের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা চান। এ লক্ষ্যে একটি ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প গ্রহণে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টেকে আহ্বান জানান।

বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভার অংশ হিসেবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ও বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফারের নেতৃত্বে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদলের মধ্যে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি ভার্চুয়াল সভায় অর্থমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে অর্থ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের অবাসিক প্রতিনিধি মার্সি টেম্বনসহ অন্য কর্মকর্তারা অংশ নেন।

অর্থমন্ত্রী তার বক্তব্যে বিশ্বব্যাংক কর্তৃক বাংলাদেশের চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকারি খাতে সহজ শর্তে আরও বেশি অর্থায়নের পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তি হস্তান্তর ও বেসরকারি খাতেও সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য বিশ্বব্যাংকের প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দক্ষতা ও সক্ষমতার কথা বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দলকে অবহিত করেন।

সভায় হার্টউইগ শেফার বিশ্বব্যাংকের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) সম্পদের সর্ববৃহৎ ব্যবহারকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করেন। তিনি আইডিএ অর্থায়নে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশকে রোল মডেল হিসেবে অভিহিত করে বাংলাদেশের এ দক্ষতা ও সাফল্যকে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলনে যথাযথভাবে তুলে ধরার মাধ্যমে আইডিএ খাতে উন্নত ও ধনী দাতা দেশগুলোর অধিকতর অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালনে নেতৃত্বদানের আহ্বান জানান। তিনি বিশ্বব্যাংকের আইডিএ খাত থেকে সহায়তা গ্রহণের ৫০ বছরপূর্তি এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছরপূর্তিতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামালের মাধ্যমে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে শুভেচ্ছা জানান।

অর্থমন্ত্রী সভায় অবহিত করেন যে, অপ্রত্যাশিত অভিঘাত কভিড-১৯ মহামারিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ ও ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন ধরনের সহায়তাদানের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে সঠিক পথে পরিচালনার ব্যবস্থা করেছে। ফলশ্রুতিতে এই ক্রান্তিকালেও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশ শীর্ষ পাঁচটি সহনশীল অর্থনীতির মধ্যে রয়েছে।

হার্টউইগ শেফার দারিদ্র্য দূরীকরণ, দুর্যোগ মোকাবিলাসহ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের গৃহীত লাগসই পরিকল্পনা ও এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জিত সাফল্যেরও প্রশংসা করেন। এ সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে নেতৃত্ব দিতে পারে মর্মে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্য বিদ্যমান সম্পর্কে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রী ও সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সহযোগিতা কামনা করেন।