ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহজুড়ে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ার পাশাপাশি প্রধান সূচকের উত্থান দেখা গেছে। একইসঙ্গে দৈনিক গড় লেনদেন ১১ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে গত সপ্তাহে বাজার মূলধন বেড়েছে শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ। আগের সপ্তাহে ৪ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে, আর গত সপ্তাহে ৫ কার্যদিবস লেনদেন হয়।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত সপ্তাহে মোট ৪১২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৮৮টির, কমেছে ৩৯টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৬৮ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি ১৭টির। দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৪৩৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছিল ৪৯৩ কোটি ৯৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ১১ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ডিএসইর টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে ম্যাকসন্স স্পিনিং মিলস লিমিটেড। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ। সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে শেয়ারদর ৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ বা ৬০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ১৪ টাকা ৩০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনজুড়ে ৪৫ লাখ ১৮ হাজার ৪৮৯টি শেয়ার মোট ২ হাজার ১৫৬ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৬ কোটি ৫৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বনিম্ন ১৪ টাকা ও সর্বোচ্চ ১৫ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে।
বস্ত্র খাতের এ কোম্পানিটি ২০০৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। ৫০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ২৩৮ কোটি ২৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির ২৩ কোটি ৮২ লাখ ৩২ হাজার ৫৩৮ শেয়ার রয়েছে। ডিএসই থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৩০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৬৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ শেয়ার।
এর পরের অবস্থানগুলোয় থাকা যথাক্রমে মেট্রো স্পিনিং লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২১ দশমিক ১৪ শতাংশ। কে অ্যান্ড কিউ বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১৪ দশমিক ৪২ শতাংশ। আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ। তাওফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসির শেয়ারদর বেড়েছে ১২ দশমিক ২৪ শতাংশ। ড্রাগন সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১২ দশমিক ১৭ শতাংশ। ইনটেক লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১১ দশমিক ৯১ শতাংশ। কেডিএস অ্যাকসেসরিজ লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। কাট্টলী টেক্সটাইল লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১১ দশমিক ৩২ শতাংশ। এছাড়া ভিএফএস থ্রেড ডায়িং লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১০ দশমিক ৯৭ পয়সা।
অন্যদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে লেনদেনের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে উঠে আসে শাইনপুকুর সিরামিকস লিমিটেডের গত সপ্তাহে ২৩ কোটি ৫৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সাপ্তাহিক লেনদেনে শীর্ষে অবস্থান করছে কোম্পানিটি। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অবদান ৫ দশমিক ৪২ শতাংশ। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ১৯ মার্চ থেকে ধারাবাহিকভাবে শেয়ারদর বাড়ছে। ওইদিন কোম্পানির শেয়ারদর ছিল ৩২ টাকা, যা গতকাল ৩ এপ্রিল লেনদেন হয় ৪৫ টাকা ৩০ পয়সায়। আর এই দর বাড়াকে অস্বাভাবিক মনে করছে ডিএসই। সম্প্রতি কোম্পানিটির অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে ডিএসই নোটিশ পাঠায়। জবাবে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ারদর বাড়ছে বলে জানায় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
এদিকে গতকাল ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৫ দশমিক ৫২ শতাংশ বা ২ টাকা ৫০ পয়সা কমে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ৪২ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনজুড়ে ৪১ লাখ ৯৬ হাজার ৪৯২টি শেয়ার মোট ৩ হাজার ২৬৮ বার হাতবদল হয়; যার বাজারদর ১৮ কোটি ৪৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনিম্ন ৪২ টাকা ৩০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ টাকা ৯০ পয়সায় হাতবদল হয়।
এদিকে লেনদেনের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। গত সপ্তাহে মোট লেনদেনের চার দশমিক ৭৬ শতাংশ ছিল আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের। গতকাল ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৩ দশমিক ২৮ শতাংশ বা ৩ টাকা ৫০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ১১০ টাকা ৩০ পয়সায় হাতবদল হয়। যার সমাপনী দরও ছিল একই। এদিন কোম্পানিটির ১৬ লাখ ১৬ হাজার ৪৫৮টি শেয়ার মোট ২ হাজার ৩৭০ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ১৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনিম্ন ১০৪ টাকা ৯০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১১২ টাকায় ওঠানামা করে। গত এক বছরের মধ্যে শেয়ারদর ৫৩ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ১১২ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে।
এন এস