টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ : ওমানে সাকিব-মাহমুদউল্লাহদের অর্জন

 

দারুণ সব উত্থান পতনের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছে বাংলাদেশ দলের ওমান মিশন।  টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর ওমানের রাস্তাগুলোই বাংলাদেশ দলের ক্লান্তি বয়ে বেরিয়েছে। অবশ্য স্বাগতিক ওমান ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে স্বস্তির জয়ের পর দ্বিতীয় পর্বে খেলার টিকেট পেয়ে গেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। প্রথম ম্যাচ হেরে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া বাংলাদেশ দল ওমানের সৌন্দর্য্য উপভোগের মুহূর্ত পেয়ে গেছে।

প্রথম পর্বে ব্যাটে-বলে বাংলাদেশ দলের সেরা পারফর্মার সাকিব আল হাসান। তিন ম্যাচে এই টাইগার অলরাউন্ডারের ব্যাট থেকে এসেছে ১০৮ রান। প্রথম পর্বে সেরা রান সংগ্রাহকদের তালিকায় সাকিবের অবস্থান তিন নম্বরে। তার উপরে আছেন কেবল নেদারল্যান্ডসের ওপেনার ম্যাক্স ও’দাউদ ও ওমানের ব্যাটসম্যান জাতিনদার সিং। উইকেট শিকারিদের তালিকায় শীর্ষে আছেন সাকিব। এরই মধ্যেই তিনি তুলে নিয়েছেন ৯ উইকেট। ৬ উইকেট নিয়ে এই তালিকায় যৌথভাবে তিন নম্বরে আছেন টাইগার পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকেই ব্যাটে-বলে পারফর্ম করছেন সাকিব।

মুস্তাফিজও বোলিং জাদুতে মুগ্ধ করেছেন নিয়মিত। যদিও আইপিএলে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর সাকিবের ফর্ম নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা ছিল। তবে অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে সাকিব জানিয়ে দিয়েছেন, বিশ্ব আসর আর জার্সির রংটা লাল-সবুজ হলেই তিনি ভিন্ন কেউ। যদিও বাংলাদেশ দলের ওপেনারদের ধারাবাহিকতার অভাব চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৬ রানের ব্যবধানে হারার ম্যাচে ৫ রান করে ফিরেছিলেন সৌম্য সরকার। লিটন দাসও সমান রান করে আউট হয়েছিলেন।

লিটন একাদশে টিকে গেলেও পরের দুই ম্যাচে একাদশে জায়গা হয়নি সৌম্যর। দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক ওমানের বিপক্ষে ফিরেই ৫০ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন নাইম শেখ। যথারীতি দ্বিতীয় ম্যাচেও ব্যর্থ ছিলেন লিটন। তিনি সেই ম্যাচে করেন ৭ বলে ৬ রান। পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে দারুণ শুরু করেও ২৩ বলে ২৯ রানে থেমেছেন লিটন। আর আগের ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরিয়ান নাইম আউট হয়েছেন শূন্য রানে। ব্যাট হাতে রান খুঁজে পাচ্ছেন না মুশফিকুর রহিমও। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৮ রানের পর ওমানের সঙ্গে ৬ ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ৫ রানের ইনিংস খেলেছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান।

আগের দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে খুব বেশি অবদান রাখতে না পারলেও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ২৮ বলে ৫০ রানের ইনিংস খেলে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। এদিকে বল হাতে মুগ্ধতা ছড়িয়েই যাচ্ছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও শেখ মেহেদী। তিন ম্যাচেই তারা প্রতিপক্ষের রানের লাগাম টানতে দারুণভাবে সফল হয়েছেন। সাইফউদ্দিন ৪ উইকেট পেলেও তার মিতব্যয়ী বোলিং বাংলাদেশ দলকে নির্ভার করেছে অনেকটাই। এর মধ্যে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ৬ বলে ১৯ রানের ক্যামিও ইনিংসে ব্যাট হাতেও দলের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন এই অলরাউন্ডার।

স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ১৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার ছিলেন মেহেদী। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে ১৪ রানে ১ উইকেট ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ২০ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন এই ডানহাতি স্পিন অলরাউন্ডার। সার্বিক পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করে বলাই যায় দারুণ সব উত্থান পতনের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছে বাংলাদেশ দলের ওমান মিশন।