জার্মানির নারী ইমাম পেলেন বিশেষ সম্মাননা

জার্মানিতে মুসলিম নারীদের অধিকার এবং মসজিদে মুখ আবৃত না করে প্রবেশাধিকারের জন্য লড়াই করছেন সাইরান আতিস৷ এই নারী ইমাম পেয়েছেন উরানিয়া মেডেল৷

জার্মানিতে নারীদের অধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলার জন্য আলোচিত আইনজীবী, লেখক সাইরান আতিস৷ তুর্কি বংশোদ্ভূত এই জার্মান নারী প্রশিক্ষণ নিয়ে বার্লিনের ইবনে রুশদ-গ্যোটে মসজিদে ইমামের দায়িত্বও পালন করছেন৷ ইসলামি পদার্থবিদ ও দার্শনিক ইবনে রুশদ এবং জার্মান কবি ও দার্শনিক ইয়হাস র নামানুসারে মসজিদটির নামকরণ করা হয়েছে৷

২০১৭ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন আতিস নিজেই৷ তবে প্রচলিত মসজিদগুলোর মতো নয় এটি৷ সেখানে যে-কোনো মানুষেরই প্রবেশাধিকার রয়েছে৷ নারী-পুরুষ একসঙ্গেই প্রার্থনায় অংশ নিতে পারে৷

কোলনের কেন্দ্রীয় মসজিদ হিসেবে পরিচিত এই মসজিদটি ইউরোপের অন্যতম বড় এবং জার্মানির সবচেয়ে বড় মসজিদ৷ এটির আয়তন ৪৫০০ বর্গমিটার৷ এতে একসঙ্গে দুই থেকে চার হাজার মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে৷ জার্মানিতে তুর্কি মুসলিমদের সংগঠন ডিটিব মসজিদটি নির্মাণ করেছে৷ নামাজের পাশাপাশি সেখানে বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে সংলাপ, খেলাধুলা আয়োজনের ব্যবস্থা এবং দোকান ও লাইব্রেরি রয়েছে৷

এই মসজিদের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য, কোনো নারীকে সেখানে মুখ ঢেকে প্রবেশ করতে হয় না৷ আতিস ২০১৭ সালে জার্মানির স্পিগেল পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন. ‘‘আমাদের মসজিদে কাউকে নিকাব বা বোরকা পরে আসতে হবে না৷’’

আতিসের এই সামাজিক আন্দোলনের জন্য তাকে সম্মাননা জানালো বার্লিনের বিখ্যাত সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান উরানিয়া৷ ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় এক আয়োজনের মধ্য দিয়ে তার হাতে পদকটি তুলে দেয়া হয়৷

১৩০ বছরের পুরোনো প্রতিষ্ঠানটি বিজ্ঞান নিয়ে মানুষের মধ্যে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরিতে ভূমিকা রেখে আসছে৷ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সেখানে বক্তৃতা, কনসার্ট বা প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়৷ তাদের বক্তাদের তালিকায় রয়েছেন আলবার্ট আইনস্টাইন, টোমাস মান, আঙ্গেলা ম্যার্কেল, সিমন রাটলের মতো বিখ্যাতরা৷

এবারের উরানিয়া পদক পাওয়া সাইমন আতিস ১৯৬৩ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে জন্ম নেন৷ চার বছর বয়স থেকেই তিনি জার্মানিতে বসবাস করছেন৷ ইসলামে মুক্ত চিন্তার লড়াই, নারীদের সমান অধিকার, উদার মসজিদ প্রতিষ্ঠার জন্য এরইমধ্যে আলোচিত হয়ে উঠেছেন তিনি৷ নিজ সম্প্রদায়ের অনেকের সমর্থন যেমন পাচ্ছেন, তেমনি আবার পাচ্ছেন হুমকিও৷ যে কারণে তাকে সার্বক্ষণিক পুলিশি নিরাপত্তায় থাকতে হয়৷