চলন্ত ট্রেনে সন্তান জন্ম দিলেন নবীয়া বেগম (৩৪)। রোববার রাতে রাজধানীর কমলাপুর থেকে উত্তরবঙ্গের লালমনিরহাটগামী আন্তনগর লালমনি এক্সপ্রেসে করে নবীয়া ও তাঁর স্বামী ছকমাল মিয়া বাড়ি যাচ্ছিলেন। ট্রেন ছাড়ার কিছুক্ষণ পরই তাঁর প্রসব বেদনা ওঠে। গভীর রাতে আশপাশে ট্রেন থামার মতো কোনো রেলস্টেশন ছিল না। ফলে নবীয়া ট্রেনেই সন্তানের জন্ম দেন।
ট্রেনটিতে কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। ট্রেনের অন্য নারী যাত্রীদের সহায়তায় নবীয়া সন্তানের জন্ম দিলেও তাঁর রক্তক্ষরণ বন্ধ হচ্ছিল না। তাই সকাল সোয়া ৭টার দিকে ট্রেনটি বগুড়া স্টেশনে থামলে নবীয়া ও তাঁর স্বামী সেখানে নামেন। স্টেশনে অপেক্ষমাণ একজন ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে সেখান থেকে বিষয়টি বগুড়া ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়। পরে স্টেশন অফিসার আকরামুল হাসানের নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল রেলস্টেশন থেকে প্রসূতি ও নবজাতককে উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দেন।
বর্তমানে নবীয়া বেগম হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিভাগে চিকিৎসাধীন। নবীয়া ও তাঁর স্বামী ছকমাল মিয়া জানালেন, তাঁদের বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামে। ছকমাল মিয়া পেশায় দিনমজুর। রাজধানীতে রাজমিস্ত্রির জোগালির কাজ করেন। পোশাকশ্রমিক নবীয়া সন্তান পেটে আসার পর আর কাজে যাননি। এই দম্পতির আগেও তিনটি ছেলে সন্তান আছে। নবীয়া অন্তঃসত্ত্বা হলেও চিকিৎসকের কাছে যাননি। কবে সন্তান ভূমিষ্ঠ হবে সেটাও অজানা ছিল এই দম্পতির।
নবীয়া জানালেন, সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে অন্য যাত্রীরা বগুড়া রেলস্টেশনে নামার পরামর্শ দেন। অন্য সন্তানদের নামের সঙ্গে মিল রেখে নবজাতকের নাম ইব্রাহীম হোসেন রাখা হয়েছে বলে জানালেন নবীয়া।
বগুড়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা আকরামুল হাসান জানালেন, ৯৯৯ নম্বর থেকে ফোন পেয়ে সকালে বগুড়া স্টেশন থেকে মা ও নবজাতককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয়।
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, নবীয়া ও তাঁর নবজাতক সুস্থ আছে।