চলতি বছর চাকরি হারিয়েছেন ৭৩ হাজার ব্যাংক কর্মী

 

ব্যয়সংকোচনের লক্ষ্যে আট হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে ইতালির বৃহত্তম ব্যাংক ইউনিক্রেডিট। এর মধ্য দিয়ে চলতি বছর বিশ্বব্যাপী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মী ছাঁটাইয়ের সংখ্যা ৭৩ হাজার ছাড়াল, যার সিংহভাগই ছাঁটাই হচ্ছে ইউরোপে। মূলত অঞ্চলটির অব্যাহত ঋণাত্মক সুদহার ও ক্রমাগত মন্থর অর্থনীতি ঋণদাতাগুলোকে ব্যয়সংকোচনে বাধ্য করছে। খবর ব্লুমবার্গ, এএফপি।

এক বিবৃতিতে ইতালীয় ব্যাংকটি জানিয়েছে, ইউনিক্রেডিটের ২০২০-২৩ সালের কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পশ্চিম ইউরোপে আট হাজার কর্মী ছাঁটাই করা হবে, যা ব্যাংকটির পশ্চিম ইউরোপের ফুলটাইম ইকুইভেলেন্ট (এফটিই) পদের ১২ শতাংশ। কর্মী ছাঁটাইয়ের পাশাপাশি অঞ্চলটির ৫০০ শাখা বন্ধ করার পরিকল্পনা রয়েছে ইউনিক্রেডিটের, যা অঞ্চলটিতে ব্যাংকটির মোট শাখার ১৭ শতাংশ।

এ ব্যয়সংকোচন পরিকল্পনা থেকে ব্যাংকটি ১০০ কোটি ইউরো সাশ্রয়ের আশা করছে।

২০১৬ সালের মাঝামাঝি ইউনিক্রেডিটের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব নেয়ার পর এখন পর্যন্ত ১৪ হাজার এফটিই ছাঁটাই করেছেন জঁ-পিয়েরে মুশিয়ের। এর বাইরে ৯০০টির বেশি শাখা বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি।

নিজের চার বছর মেয়াদি সংস্কার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন তিনি।

এদিকে ইতালীয় ব্যাংকটির ঘোষণার মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ছাঁটাইয়ের সংখ্যা ৭৩ হাজার ৪০০তে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৮৬ শতাংশই ইউরোপে ছাঁটাই হয়েছে। এ সংখ্যা মূলত ইউরোপীয় ব্যাংকগুলোর দুর্বলতাকেই স্পষ্ট করে তুলছে। একদিকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিরোধগুলোর ফলে বড় ধাক্কা দিচ্ছে ইউরোপের রফতানিনির্ভর অর্থনীতিকে। অন্যদিকে অব্যাহত ঋণাত্মক সুদহার ব্যাংকগুলোর ঋণ রাজস্বই সংকুচিত করে ফেলছে।

যুক্তরাষ্ট্রে গত দশকের বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের পর সরকারি কর্মসূচি ও সুদহার বৃদ্ধি ঋণদাতাদের দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করেছে। কিন্তু ইউরোপে ব্যাংকগুলোকে এখনো টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করে যেতে হচ্ছে। মুনাফা বাড়ানোর পন্থা হিসেবে বহু ব্যাংক কর্মী ছাঁটাই ও ব্যবসা বিক্রি করছে।

ইউরোপের অন্যতম প্রধান ব্যাংকিং বাজার জার্মানিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মী ছাঁটাইয়ের শীর্ষে রয়েছে। দেশটির বৃহত্তম আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডয়েচে ব্যাংক ২০২২ সালের মধ্যে ১৮ হাজার কর্মী কমানোর পরিকল্পনা করেছে। একই সঙ্গে নিজেদের বিনিয়োগ ব্যাংকিং ব্যবসার একটি বড় অংশ বিক্রি করতে যাচ্ছে।