বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ প্রবল শক্তি নিয়ে ধেয়ে আসছে। বৈরি আবহাওয়ার কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় সেন্টমার্টিনে প্রায় দেড় হাজার পর্যটক পর্যটক আটকা পড়েছেন। তবে তারা নিরাপদ রয়েছেন।
শনিবার (৯ নভেম্বর) সকাল কিংবা দুপুরের দিকে বাংলাদেশে আঘাত আনতে পারে ‘বুলবুল’। এর ফলে সমুদ্রবন্দরসমূহে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত থাকায় শুক্রবার (৮ নভেম্বর) টেকনাফ-সেন্টমার্টিন সমুদ্রপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার ৩ নম্বর সংকেত ঘোষণার পর বিকেলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আশরাফুল আফসার পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সেন্টমার্টিন নৌ-পথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখতে নোটিশ দেন।
পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে উল্লেখ করে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর আহমদ জানিয়েছেন, দুর্যোগ না কাটা পর্যন্ত তাদের পরিচ্ছন্নভাবে হয়রানিমুক্ত আতিথেয়তা দিতে হোটেল কর্তৃপক্ষকে বলা আছে। আমি নিজেই রাতে এবং সকালে হোটেলগুলোতে গিয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে পর্যটকদের আতঙ্কিত না হতে আশ্বস্ত করেছি।
তিনি আরও বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে ৫টি সাইক্লোন শেল্টার ও বহুতল কয়েকটি হোটেল রয়েছে। কঠিন দুর্যোগ বা জলোচ্ছ্বাস হলেও আটকে পড়া পর্যটকদের বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। সংকেত বাড়লে আমরা তাদের এসব স্থানে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করব।
এদিকে অস্থিরমতি এই ঘূর্ণিবায়ু কোন উপকূলে আঘাত হানতে চলেছে, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৩৫ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭১৫ কিমি দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯০ কিমি দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। সাগর উত্তাল থাকায় তীরে ভিড়ছে সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করে এ ঘূর্ণিঝড় এগিয়ে আসছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশ উপকূলের দিকে। এ ঝড় স্থলভাগে আঘাত হানবে কি না, তা এখনো অনিশ্চিত। তবে ভারতের পূর্বাভাস বলছে, প্রবল থেকে অতিপ্রবল হতে পারে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক জানান, আগামীকাল শনিবার সকাল কিংবা দুপুরের দিকে ঘুর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে। প্রতিনিয়ত এর গতি বাড়ছে, আর এটার গতি বাড়তেই থাকবে।