ধর্ষণ মামলায় মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জামশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান মিঠুকে (৫০) গ্রেফতার করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ওই নারী তার পারিবারিক সমস্যা সমাধানের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিঠুর কাছে যান। পরে চেয়ারম্যান তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর ২০১৯ সালের ১ জুলাই ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে নিয়ে তাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। এতে ওই নারী রাজি না হলে এফিডেফিটের মাধ্যমে বিয়ের ফাঁদে ফেলে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
একপর্যায়ে ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার মেঘুলা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করতে থাকেন। ওই নারী গর্ভবতী হলে তাকে কৌশলে ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত ঘটানো হয়। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জের বান্দুরা মডার্ন ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা করানো হয়। কিছু দিন পর অভিযোগকারী জানতে পারেন তাদের বিয়ের আইনগত কোনো বৈধতা নেই।
পুনরায় বৈধ বিয়ের জন্য চেয়ারম্যানকে চাপ দিলে তিনি তাতে রাজি না হয়ে ২০২০ সালের ২৪ মার্চ ওই নারীকে জোরপূর্বক বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে হত্যার চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে চেয়ারম্যান মিঠু তার ইউনিয়নের দক্ষিণ জামশা গ্রামের রতন বসাকের বাড়ি ভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করতে থাকেন। ওই নারী পুনরায় স্ত্রীর মর্যাদায় তার পরিবারে উঠতে চাইলে চেয়ারম্যান তাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতে থাকেন। ওই নারী উপায় না পেয়ে এলাকার বিভিন্ন লোকজন ও থানায় অভিযোগ দিয়ে প্রতিকার না পেয়ে অবশেষে আদালতের দ্বারস্থ হন।
সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম মোল্যা বলেন, গত ৫ সেপ্টেম্বর মানিকগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন এক নারী।
ওই নারীর (২১) দায়ের করা ওই মামলায় আদালত থেকে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে ১৮ অক্টোবর রাতে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম মোল্যা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম মোল্যা বলেন, গত ৫ সেপ্টেম্বর মানিকগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন এক নারী। মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে মিঠুর বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দিলে আদালত থেকে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয় এবং তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তাকে গ্রেফতার করে সকালে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আগামী ১১ নভেম্বর মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন মিঠু। তিনি জামশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।