ছেলের সঙ্গে দেখা করতে এসে সঙ্গে করে তার জন্য কিছু খাবার এনেছিলেন মা। কিন্তু কে জানত ওই খাবারে গাঁজা রয়েছে! আর এ গাঁজা ছেলের জন্য মা-ই এনেছেন। বিষয়টি অবাক করার মতো হলেও এমনই ঘটনা ঘটেছে ভারতের প্রেসিডেন্সি কারাগারে। কারাবন্দি ছেলের জন্য পেঁপের ভেতরে গাঁজা ভরে সরবরাহ করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন মা।
কারাগার সূত্র জানা গেছে, বুধবার ছিল বিচারাধীন বন্দীদের সঙ্গে আত্মীয়দের দেখা করার দিন। নিয়ম অনুযায়ী এই দিনগুলোতে পরিবারের লোকজন কারাবন্দি অভিযুক্তকে ফল, মুড়ি, বিস্কুটের মতো খাবার দিতে পারেন। জেলকর্মীরা সেই খাবার পরীক্ষা করে পৌঁছে দেন সংশ্লিষ্ট বিচারাধীন বন্দীর কাছে। গতকাল ছেলে বাবুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তপসিয়ার বাসিন্দা সাঈদা বেগম। বছর পঞ্চাশের সাঈদা ছেলের সঙ্গে দেখা করার পর জেলকর্মীদের বলেন, তিনি ছেলের জন্য কিছু খাবার নিয়ে এসেছেন। বিভিন্ন খাবারের মধ্যে সাঈদার কাছে ছিল তিনটে বেশ বড় বড় পাকা পেঁপে।
খবরের কাগজে মোড়ানো পেঁপে দেখে প্রথমে জেলকর্মীদের সন্দেহ হয়নি। কিন্তু নাড়াচাড়া করতে গিয়ে জেলকর্মীদের মনে হয় পেঁপের মধ্যে কিছু নড়ছে। প্রথমে তারা ভেবেছিলেন, পাকা পেঁপের বীজের আওয়াজ। কিন্তু তারপরেও এক জেলকর্মীর সন্দেহ হয়। তিনি স্ক্যানারে পরীক্ষা করেন। সেখানেই ধরা পড়ে বিষয়টি। দেখা যায়, পেঁপের ভেতরে কিছু একটা জমাট বস্তু রয়েছে। পরে একটি পেঁপে মাঝখান থেকে কাটা হয়। দেখা যায়, পেঁপের ভেতর পলিথিনে মোড়ানো গাঁজা। সবকটি পেঁপের ভেতরে একইভাবে ভরা রয়েছে গাঁজার প্যাকেট। তিনটি পেঁপের ভেতর থেকে সবমিলিয়ে প্রায় ৫০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করেন জেলকর্মীরা ।
কারাগারের একটি সূত্র জানিয়েছে, জেলে বসেই অন্য বন্দীদের কাছে মোটা টাকায় গাঁজা বেচতেন বাবু। আর সেই কারণেই গাঁজা আনিয়েছিল মাকে দিয়ে। এ ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে আটক করা হয় সাঈদাকে। বিষয়টি জেল সুপারকে জানানো হলে তার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় সাঈদাকে।
জানা গেছে, পেঁপে কেটে বীজ বের করে গাঁজার প্যাকেট ঢুকিয়ে আবার পেঁপের আঠা দিয়েই জুড়ে দেয়া হয়েছিল ওই চেরা অংশ। খুব খুঁটিয়ে না দেখলে বোঝা সম্ভব নয় যে পেঁপের গায়ে কোনো অংশ কাটা হয়েছে।
কারাগার সূত্র জানিয়েছে, এই ঘটনায় বন্দীদের জন্য বাইরে থাকা আসা খাওয়া এবং জামাকাপড় আরও সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কারণ, একইভাবে মোবাইল থেকে সিম বা নেশা জাতীয় দ্রব্য জেলে ঢুকছে বলে মনে করছেন কারা দফতরের কর্মকর্তারা।