ঢাকার দক্ষিণখান এলাকায় অবস্থিত ইন্ট্রাকো ফ্যাশন এবং ইন্ট্রাকো ডিজাইনের দুটি কারখানায় মোট শ্রমিক সংখ্যা ১ হাজার ২০০। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের মার্চের পূর্ণাঙ্গ ও এপ্রিলের ১৫ দিনের বেতন বকেয়া রয়েছে। এসব বকেয়া পরিশোধে মালিকপক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। ফলে পাওনা আদায়ে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে এ খাতের সংগঠন ও সরকারপক্ষকে। এখনো অনিশ্চয়তা না কাটলেও সম্প্রতি মালিক পক্ষের দেয়া দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আজ পরিশোধ করা হবে এসব শ্রমিকের বকেয়া বেতন।
ইন্ট্রাকো সম্পর্কে জানতে চাইলে বিজিএমইএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম মান্নান কচি বলেন, তিন বছর ধরেই কারখানা চালাতে পারছিল না। ধারাবাহিকভাবে বেতন ঠিকমতো পরিশোধও করতে পারছিল না। তার পরও মালিকপক্ষ কারখানা চালানোর চেষ্টা করে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে একজন নতুন অংশীদার যুক্ত হন। অনেক দিন ধরে মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে না। তিন বছর ধরে এভাবে সবার জন্য সমস্যার কারণ হচ্ছে কারখানাটি। মোট বকেয়ার পরিমাণ আড়াই কোটি টাকার মতো। মন্ত্রণালয়ের ডাকা সভায় সমাধানের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রতিশ্রুতিও আদায় করা হয়েছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি ইন্ট্রাকো ফ্যাশন এবং ইন্ট্রাকো ডিজাইন লিমিটেডের সমস্যা নিরসনে সভা ডেকেছিল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। সভায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, শ্রম অধিদপ্তর ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিরা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পোশাক পণ্য প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ প্রতিনিধি এবং ইন্ট্রাকো মালিক প্রতিনিধি।
সভায় উপস্থিত বিজিএমইএ সহসভাপতি মো. নাসির উদ্দিন বলেন, কারখানা দুটির শ্রমিক সংখ্যা ১ হাজারেরও বেশি। এ শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধে সভায় মালিকপক্ষের প্রতিনিধির থেকে প্রতিশ্রুতি আদায় করা হয়েছে। অনিশ্চয়তা না কাটলেও বকেয়া পরিশোধ হয়ে যাবে বলে আশা করছি।
সভা সূত্র জানিয়েছে, সভায় ইন্ট্রাকোর মালিকানাধীন কারখানা দুটির সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৮ তারিখের মধ্যে (আজ) বেতন এবং ৩০ তারিখের মধ্যে বোনাস পরিশোধ করতে হবে। ব্যাংক থেকে টাকা প্রাপ্তিসহ যেকোনো ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন হলে সরকার এবং বিজিএমইএর পক্ষ থেকে করা হবে।
এ সময় কারখানার মূল মালিককে পাওয়া যায়নি। এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকদের কেউ যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হবে বলেও জানানো হয়। এ বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থা ও প্রশাসনও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে। যদি কারখানা বন্ধ করে দেয়া হয়, সেক্ষেত্রে শ্রমিকের পাওনাদির বিষয় থাকবে। ঈদের পর সভা করে এর সমাধান করা হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।