বাংলাদেশের ইন্স্যুরেন্স বিপ্লবের অগ্রদূত নূরে আলম ছিদ্দিকী অভি। বদলে দিয়েছেন ইন্স্যুরেন্সের সংজ্ঞা—গ্রাহক ও এজেন্ট উভয়ের জন্য গড়ে তুলেছেন একটি স্মার্ট ক্যারিয়ার প্ল্যাটফর্ম।
নূরে আলম সিদ্দিকী অভি একজন রূপকার, একটি বিপ্লব, একটি ইন্সুরেন্স ইন্ডাস্ট্রির নাম। বাংলাদেশের আধুনিক ইন্স্যুরেন্স ব্যবস্থার যে রূপান্তর আজকের দিনে শিক্ষিত ও সৃষ্টিশীল তরুণদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে, তার পেছনে যিনি অন্যতম পথপ্রদর্শক, তিনি নূরে আলম সিদ্দিকী অভি। দেশের ইন্স্যুরেন্স খাতে ‘থ্রি-লেয়ার’ (FA, UM, BM) কাঠামোর প্রবর্তক হিসেবে তাকে বলা হয় এ যুগের ইন্স্যুরেন্স বিপ্লবের জনক।
তিনি প্রথম ব্যক্তি যিনি গ্রাহকবান্ধব বীমার পাশাপাশি এজেন্টবান্ধব পেশার ধারণা প্রতিষ্ঠা করেন। তার উদ্ভাবিত “সেলস পলিসি”-র ফলেই আজ কমিশন-ভিত্তিক এজেন্টরাও পাচ্ছেন মাসিক সম্মানী, বোনাস, পেনশন ফান্ড, হেলথ ও গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স সুবিধা, বিদেশ ভ্রমণ, লিডারস ক্লাব, পিকনিক ক্লাবসহ অসংখ্য সুযোগ-সুবিধা। ফলে, ইন্স্যুরেন্স এখন আর শুধুই বিক্রয় পেশা নয়—এটি হয়ে উঠেছে একটি স্মার্ট ক্যারিয়ার।
ক্যারিয়ারের শুরু এবং উত্থান –
২০০০ সালে আন্তর্জাতিক বীমা প্রতিষ্ঠান মেটলাইফে একজন FA হিসেবে যাত্রা শুরু করেন অভি। নিজের কঠোর পরিশ্রম, মেধা ও একাগ্রতার মাধ্যমে তিনি দ্রুতই ইউনিট ম্যানেজার (UM), এরপর ব্রাঞ্চ ম্যানেজার (BM) হিসেবে পদোন্নতি পান। বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র যিনি একাধিকবার মেটলাইফ আলিকোতে বিশ্বসেরা নম্বর ওয়ান পজিশন অর্জন করেন। তার ঝুলিতে রয়েছে প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ডসহ অগণিত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এবং ৪৮টি দেশের ভ্রমণ।
দেশি কোম্পানির উত্থানে নেতৃত্ব –
বিদেশি প্রতিষ্ঠানে ঈর্ষণীয় সাফল্যের পর, দেশীয় বীমা খাতের দুর্দশা ঘোচাতে তিনি ২০১৪ সালে মেটলাইফ থেকে পদত্যাগ করেন এবং চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স-এর যাত্রা শুরু করেন। সেখানে সাফল্যের পর ২০১৫ সালের শেষদিকে তিনি যোগ দেন সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স-এ। সে সময় কোম্পানিটি ছিল দুর্বল এবং প্রায় অচল। অভির নেতৃত্বেই সেখানে শুরু হয় “মেট্রো প্রজেক্ট”, যার মাধ্যমে সোনালী লাইফ নতুন জীবন পায়।
তার হাতে গড়ে ওঠে বহু লিডার—যাদের অনেকেই আজ দেশের শীর্ষস্থানীয় বীমা প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদে অধিষ্ঠিত। যেমন: সাজিদুল আনোয়ার, ডিএমডি, মেঘনা লাইফ, শাহ আল মামুন, ডিএমডি, আলফা লাইফ, রফিকুল ইসলাম, এএডি, সোনালী লাইফ, এমদাদ উল্লাহ, ডিএমডি, চার্টার্ড লাইফ।
এছাড়াও মেটলাইফ আলিকো থেকে তার গড়া ১৮ জন ব্রাঞ্চ ম্যানেজার এখন দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
আলফা ইসলামি লাইফে নতুন বিপ্লব –
২০২০ সালে তিনি হাল ধরেন ভেঙে পড়া আলফা ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির। চেয়ারম্যান আলমগীর শামসুল আলামিনের অনুরোধে তিনি সেখানে নতুন করে শুরু করেন মেট্রো প্রজেক্ট। মাত্র ৩ বছরে তিনি গড়ে তোলেন: ২৫,০০০+ কর্মী, ১৩০+ অফিস, শত কোটি টাকার লাইফ ফান্ড, এবং অসংখ্য সফল লিডার…
ভবিষ্যৎ ভাবনা ও দর্শন –
নূরে আলম ছিদ্দিকী অভি মনে করেন, আগে দক্ষ লিডার তৈরি করা গেলে, কোম্পানি আজ হোক বা কাল, ঠিকই ঘুরে দাঁড়াবে। তাই তার মূল লক্ষ্য এখন একটি কোম্পানি নয়—পুরো ইন্ডাস্ট্রির রূপান্তর ঘটানো।
নূরে আলম সিদ্দিকী অভি’র দৃষ্টিতে আলফা শুধুমাত্র একটি বীমা কোম্পানি নয়, এটি একটি লিডার তৈরির ইনস্টিটিউশন। তিনি স্বপ্ন দেখেন—আলফা একদিন মেটলাইফের মতো বিশ্বসেরা কোম্পানিতে পরিণত হবে।
তার বিশ্বাস, প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নয়, পজিটিভ কম্পিটিশনের মাধ্যমে ইন্স্যুরেন্স খাতের সার্ভিস ও সচেতনতা উন্নয়ন সম্ভব। আর এভাবেই পুরো দেশকে বীমার প্রকৃত সুফলের আওতায় আনা যাবে।