ইকবাল এতদিন কোথায় ছিল? প্রশ্ন ছুড়লেন মির্জা ফখরুল

 

কুমিল্লার ঘটনায় কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার যুবক ইকবাল হোসেন এতদিন কোথায় ছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শুক্রবার বিকেলে এক আলোচনা সভায় তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।

তিনি বলেন, ‘এটা তো পরিষ্কার পত্র-পত্রিকাগুলো সব দেখেন, দেখলেই বুঝতে পারবেন। সবাই এটা মেনে নেবে যে, সরকারের মদদ ছাড়া কখনও সাম্প্রদায়িক সমস্যা তৈরি হয় না।’

‘আজকে যে পত্র-পত্রিকায় লেখা হচ্ছে, এই যে ইকবালের কথা কিছুক্ষণ আগে একজন বললেন। ইকবাল নামে একজন অপ্রকৃতিস্থ ও মাদকসেবীকে ধরা হয়েছে। এটা (ইকবাল) এতদিন কোথায় ছিল? এই বিশ্বাসটা কে করবে? কারা তাকে সেখানে নিলো,’ প্রশ্ন রাখেন তিনি।

সারা দেশে পূজামণ্ডপে সংঘটিত হামলার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে সরকারকে উদ্দেশ্যে করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে গেল, কেন আপনারা সেখানে কোনো পুলিশ পাঠালেন না বা পুলিশ গেল না বা পুলিশ থেকেও কোনো ব্যবস্থা নিলো না। কেন এটা হলো?’

‘রংপুরের ঘটনায় দেখলাম আমরা একদিকে ওসি, চেয়ারম্যান সবাই মিলে আলোচনা করছে, একটা আপস করার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে বাইরে থেকে এসে লোকজন মাঝিপাড়া জ্বালিয়ে দিয়েছে। দুর্ভাগ্য! তাহলে কি আমরা বলব যে, তাদের ছত্রছায়ায় এ ঘটনা ঘটেছে,’ বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘কুমিল্লার ঘটনার পর ওবায়দুল কাদের সাহেব কী করলেন? যখনই সেদিন ঘটনাগুলো ঘটল, প্রথমে ওবায়দুল কাদের সাহেব বললেন, এটা বিএনপি-জামায়াতের লোকেরা করেছে। কথায় কথায় উনি একটাই কথা বলবেন যে, যত দোষ নন্দ ঘোষ।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনাদের চরম ব্যর্থতা যে আজকে এই সমাজে কোনো মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারেন না। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা তাদের ধর্ম পালন করবেন, মুসলিমরা তাদের ধর্ম পালন করবেন, বৌদ্ধরা তাদের ধর্ম পালন করবেন, খৃস্টানরা তাদের ধর্ম পালন করবেন- এটাই তো বাংলাদেশ। আপনারা কী করছেন? অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করেছেন, যা হাজার বছর ধরে চলে আসছে।’

‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে মানুষের দৃষ্টি, মনোযোগকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য সরকার এ বিষয়টাকে সামনে নিয়ে এসেছে,’ যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘সরকার একেক সময়ে একেকটা বিভাজন তৈরি করছে। সেই বিভাজনে একেক সময় একেকটাকে সামনে নিয়ে আসে। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি, বিপক্ষের শক্তি, গণতন্ত্রের পক্ষে শক্তি, বিপক্ষের শক্তি। এখন তারা ধর্মীয় বিভাজনে নেমে পড়েছে, কী করে মানুষের মূল যে সমস্যা সেই সমস্যা থেকে তাদেরকে বিভ্রান্ত করা যায়।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সমস্যা জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। আমাদের সমস্যা আমরা ভোট দিতে পারি না। আমাদের সমস্যা আমরা কথা বলতে পারি না, আমাদের অধিকারগুলো নেই, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। সেই জায়গাগুলো থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে এসে একটা সাম্প্রদায়িক সংকট, সাম্প্রদায়িক সমস্যা তৈরি করছে।’

এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে জনগণের ঐক্য সৃষ্টির কোনো বিকল্প নাই উল্লেখ করে সরকার হটাতে দলমত নির্বিশেষে আন্দোলনের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান বিএনপি মহাসচিব।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভায় লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান সভাপতিত্ব করেন।