আট মাস বন্ধ থাকবে জাটকা আহরণ, নিষেধাজ্ঞা শুরু কাল

মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিন ধরে চলা নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত ২৫ অক্টোবর। এই নিষেধাজ্ঞার পাঁচদিন পরেই জাটকা ধরার নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে আগামীকাল ১ নভেম্বর। এটি কার্যকর থাকবে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত।

এদিকে অসংখ্য জেলের মাথায় ঝুলছে ঋণের বোঝা। মাছ ধরেই কাটানোর কথা ছিল এই ঋণ। ফলে কিছুটা হতাশায় পড়েছে ভোলার মেঘনা পাড়ের জেলেরা।

জানা গেছে, ইলিশের প্রজনন মৌসুম শেষ হওয়ার পর জাটকা রক্ষা করার সময়। তাই ১ নভেম্বর থেকে আগামী আট মাস ২৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত জাটকা ধরা নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। এই আট মাস জাটকা ধরা, বিক্রয়, মজুদ ও পরিবহণ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে। তবে বড় আকারের ইলিশ ধরতে কোনো বাঁধা নেই।

দৌলতখান উপজেলার মাঝি আব্দুর রহিম দাবি করে বলেন, ‘সাগর ও নদীতে জাল ফেললে ছোট-বড় সব সাইজের ইলিশ ধরা পড়ে। জালে মাছ বাঁধার পরে আর ফেলে দেওয়া হয় না। এ অবস্থায় ছোট ফাঁসের জাল উৎপাদন বন্ধের দাবি উঠেছে। একইসঙ্গে জেলেরা জাটকা ধরা বন্ধ থাকাকালে প্রয়োজনীয় সাহায্যের দাবিও জানিয়েছেন।

জেলেদের দাবি, নিষিদ্ধ যেসব জাল জাটকা নিধন করছে, সেসব জাল কেন ধরা হচ্ছে না? প্রকাশ্যে এসব জাল দিয়ে প্রভাবশালীরা শত শত টন জাটকা ধরছে। প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আগে এসব জাল বন্ধ করতে হবে।

জেলে মো. মিজান বলেন, ‘আমরা অসহায়, তাই সরকার আমাদের ওপর জুলুম করছে। নিষিদ্ধজাল কেন ধরছে না? আমাদের জালে দুই থেকে চারটা জাটকা ধরা পরলেই হয়রানির শেষ থাকে না। এ বছর ইলিশ পাওয়া যায়নি। তার ওপর চাঁদাবাজি আর ডাকাতি তো রয়েছেই।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘মা ইলিশ ডিম ছাড়ার পর তা পর্যায়ক্রমে রেনু, জাটকা ও পরে পূর্ণাঙ্গ ইলিশে পরিণত হয়। ডিম থেকে রেণু তৈরি হওয়ার পর পরিপূর্ণ ইলিশে পরিণত হতে সময় লাগে। তাই ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত আট মাস দেশের সব নদ-নদীতে জাটকা ধরা বন্ধ থাকবে। জাটকা রক্ষা করা গেলে আগামী মৌসুমে ইলিশের উৎপাদন বেশি হবে। এ জন্য আমরা সাধারণ জেলেদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা ছাড়াও প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। এ ছাড়া সব নিষিদ্ধ জালের বিষয়ে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং আগামীতেও থাকবে।’