অচলাবস্থা কাটিয়ে পাথর আমদানি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা

সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর ব্যবহার করে ভারত থেকে পাথর আমদানি কার্যক্রমে অচলাবস্থা দূর হয়েছে। এ সময় পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা অটো এসএমএস সফটওয়্যার পদ্ধতিতে ওজন পরিমাপের মাধ্যমেই আমদানি কার্যক্রম চলছে। অচলবস্থা কাটিয়ে গতকাল পুরোদমে চলে আমদানি কার্যক্রম। অন্যদিকে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের একটি প্রতিনিধি দল তামাবিল স্থলবন্দর পরিদর্শন করেছে।

এর আগে অটো এসএমএস পদ্ধতিতে পাথর আমদানির সরকারি সিদ্ধান্তের পর ব্যবসায়ীরা গত ৭ জানুয়ারি থেকে সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে পাথর আমদানি বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকেই বন্দরে অনেকটা অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। এতে ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পাশাপাশি সরকারও প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারায়।

তামাবিল স্থলবন্দরের পাথর, চুনাপাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক সরোয়ার হোসেন ছেদু জানান, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়েছে। এরপর আমদানিকারক সমিতির নেতারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে আমদানি শুরু করতে সম্মত হন। মঙ্গলবার থেকে পাথর আমদানি শুরু হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অটো এসএমএস বা ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরীক্ষামূলকভাবে চলবে। ব্যবসায়ীদের দাবি আমলে নিয়ে একটি প্রতিনিধি দল পর্যবেক্ষণে এসেছে। এর পর পরই ব্যবসায়ীরা আমদানি শুরু করতে সম্মত হন বলে জানান তিনি।

অপরদিকে অটো এসএমএস পদ্ধতিতে আমদানি-রফতানির বিষয়টি সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করতে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (ট্রাফিক) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল তামাবিল স্থলবন্দরে অবস্থান করছেন। তারা আমদানি-রফতানির বিষয়টি পর্যবেক্ষণ শেষে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন।

তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে পাথর আমদানিকারকদের অভিযোগ একপাশ থেকে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে এনে অন্যপাশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে মাপ কখনো সমান হবে না। তাদের মতে, ভারতের ব্যবসায়ীরা পাথর রফতানি করে থাকেন ফিতা দিয়ে মেপে। ফিতা দিয়ে মাপা বোল্ডার পাথরের সঙ্গে থাকা পানি ও মাটি ওজনে হেরফের হয়। ফলে ভারত

থেকে ম্যানুয়াল পদ্ধতির কাগজ নিয়ে এসে বাংলাদেশ বন্দরে বেকায়দায় পড়তে হবে আমদানিকারকদের। সব তথ্য নতুন করে দেয়ার সঙ্গে ওজনের তারতম্যের জন্য গুনতে হবে জরিমানা। ওজনে কম হলেও দিতে হবে নির্ধারিত ওজনের টাকা। এছাড়া প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০ গাড়ি বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে। এভাবে লোকসান করে ব্যবসা করা সম্ভব নয় বলে মত ছিল ব্যবসায়ীদের।

তামাবিল স্থলবন্দরের উপপরিচালক মো. মাহফুজুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, সরকারি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো আরো ত্বরান্বিত করার অংশ হিসেবে তামাবিল স্থলবন্দরে গত ৭ জানুয়ারি থেকে অটো এসএমএস সফটওয়্যার পদ্ধতি চালু করা হয়। এতদিন শুধু ওজন মাপার স্কেল চালু ছিল। এটা ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে সরকার করেছে। তবে ব্যবসায়ীরা তাতে আপত্তি তুলেছেন।

তিনি বলেন, পাথর আমদানি বন্ধ রাখার পর ব্যবসায়ীদের ঢাকায় নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়। এরপর তারা পরীক্ষামূলকভাবে পাথর আমদানি শুরু করেন। বর্তমানের পুরোদমে পাথর আমদানি চলছে।