সম্মিলিত আন্দোলনে নামতে ঐক্যমত হয়েছে জেএসডি-বিএনপি

ভিন্নবার্তা প্রতিবেদক: সরকার পতনে জাতীয় ঐক্যসৃষ্টি করে সম্মিলিতভাবে আন্দোলন নামতে ঐক্যমত হয়েছে জেএসডি-বিএনপি। রবিবার বিকালে আসম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-ডেএসডির সাথে দেড় ঘন্টার সংলাপ শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের একথা জানান।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা একমত হয়েছি জাতীয় ঐক্যসৃষ্টি করেই আমরা সম্মিলিতভাবে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে তাদের পতন ঘটাব। আওয়ামী লীগ সরকার থাকলে আমরা কোনো নির্বাচনে অংশ গ্রহন করব না। শুধু তাই নয়, আমরা এক সাথে এক জোটেই কাজ করব যেন আমরা এই সরকারকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থেই জনগনের কাছে একটা গ্রহনযোগ্য নির্বাচন করতে পারি সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করতে একমত হয়েছি।

তিনি বলেন, আমাদের এই ঐক্যমত শুধু নির্বাচন নয়, আমরা যেন রাষ্ট্রের একটা আমূল পরিবর্তন করতে পারি, মানুষের সামনে একাত্তর সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা যে স্বপ্ন দেখেছিলাম সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করবার জন্য আমরা যৌথভাবে সেই কাজ করার চিন্তা করেছি, সেইভাবে কাজ করব। আমরা মনে করি, আন্দোলনের মধ্য দি্য়েই ঐক্য গড়ে উঠবে এবং আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতই বলে দেবে, আমাদের জনগন বলে দিবে যে, আমরা কোন পথে এগুবো, আন্দোলনের ধারা কি হবে, আন্দোলনের গতি কি হবে?

উত্তরার ৩ সেক্টারের আসম আবদুর বরের বাসায় বিএনপির সাথে সংলাপ হয়। বিএনপি মহাসচিব বিকাল চারটায় তার বাসায় আসেন। সংলাপে চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলটির সভাপতি আসম আবদুর রব। অন্যরা হলেন, দলটির সাধারণ সম্পাদক ছানোয়ার হোসেন তালুকদার, কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন ও সহসভাপতি তানিয়া রব। বিএনপির প্রতিনিধি দলের ছিলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমদু টুকু ও মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহিরউদ্দিন স্বপন।

আসম আবদুর বর বলেন, এবারের আন্দোলনের লক্ষ্য হবে একই সাথে স্বৈরাচারি সরকারের পতন, নিপীড়নমূলক অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার উচ্ছেদ, শাসনতন্ত্র পরিবর্তন, দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নয়, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। আমরা মাঠে নামব। মাঠে জনগন আমাদের থাকবে, তারাই ডিক্টেড করবে আমরা কোথায় যাবো? আন্দোলনের কৌশল ঠিক হবে মাঠে। আজকের এই আলোচনায় আমরা ২১ দফা দাবিনামা নিয়ে কথা বলেছি। জাতীয় রাজনীতির প্রয়োজনে আন্দোলনের স্বার্থে আমাদের এই আলোচনা অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, আমরা ২০১৮ সালে আমরা একসাথে আন্দোলন করেছি। এবার পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে জাতীয় সরকারের একটা কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। আজকে দেশে জনগনের মালিকানা নেই। এবার আমরা স্বাধীনতার আকাংখিত রাষ্ট্র বিনির্মাণ শুরু করব। এই আন্দোলনই হবে আমাদের দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ।

সরকার বিরোধী আন্দোলনে বৃহত্তর প্ল্যাটফর্ম গড়তে তুলতে বিএনপি মহাসচিব গত ২৪ মে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে। প্রথম দফায় মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য, জোনায়েদ সাকির গনসংহতি আন্দোলন, সাইফুল হকের বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাথে সংলাপ করেন তিনি।

এছাড়া এই পর্যন্ত বিএনপি ২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর),জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি(জাগপা), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, ন্যাপ-ভাসানী, মুসলিম লীগ, ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, সাম্যবাদী দল, ডেমোক্রেটিক দলের সাথেও সংলাপ শেষ করেছেন বিএনপি মহাসচিব।