বিদআত হচ্ছে ধর্মের ভিতর নুতন সংযোজন
‘‘নামায-রোজার নিয়াত মুখে উচ্চারন করাও বিদআত’’

আবুল কালাম আজাদ :

বিদআত তাওহিদের বিররীত ও সুন্নতের পরিপন্হি কাজ। বিদআত হচ্ছে ধর্মের ভিতর নুতন সংযোজন। শরীয়াত সমর্থন করেনা এমন কোন কাজ ইবাদতের নিয়াতে করাকে বিদআত বলে। বিদআত নিন্দনিয়।

দ্বীনদারী কিংবা আমল ও ইবাদতের নামে নব উদ্ভাবিত এমনসব কাজ, যা রাসুল (সাঃ) কোনসময় করেননি এবং যার কোন নমুনা সাহাবী কিংবা তাবেঈনদের যুগেও পাওয়া যায়নি। সুতরাং যে দ্বীনদারী কিংবা ইবাদতের নমুনা আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বা সাহাবায়ে কেরাম অথবা তাবেঈনদের কাছ থেকেও পাওয়া যায়না, তা কোন দ্বীনদারী নয় এবং কোন ইবাদতও নয়।

বিদআতের কয়েকটি সহজ পরিচয় হলো বিদআত সুন্নাতের চেয়ে অতিরিক্ত, সুন্নাতের একরুপ আর বিদআতের বহুরুপ, সুন্নাত আল্লাহর রাসুল থেকে অনুসৃত আর বিদআত ব্যক্তিবিশেষ কতৃক উদ্ভাবিত।
রাসুল (সাঃ) কঠোরভাবে হুশিয়ারী উচ্চারন করে বলেছেন,
“যে বাক্তি এমন কোন কাজ করল, যা করা সম্পর্কে আমাদের কোন হুকুম বা নির্দেশনা নেই তা অগ্রাহ্য।”মুসলিম-১৭১৮
“যে বাক্তি আমাদের দ্বীনী কাজের উপর অন্য কোন কাজ আবিস্কার করল তা হবে অগ্রাহ্য”।-আবু দাউদ ৪৭০৬।
“সাবধান, তোমরা দ্বীনে নুতন কোনো (ইবাদত) কিছু করা থেকে বিরত থাকবে। কেননা, এতে প্রত্যেক নুতন কিছু করার নামই বিদআত। আর প্রত্যেক বিদআতই গোমরাহী আর প্রত্যেক গেমরাহী হবে জাহান্নামী”। আবু দাউদ ও নাসায়ী ১৫৭৮।

বিদআতীদের পরিনামঃ
-যারা বিদআত করে তারা হাশরের ময়দানে হাউজে কাউসারের পানি পান করতে পারবেনা।
-দুনিয়াতে তাদের দোয়া কবুল করা হবেনা।
-পরকালে বিদআতিরা চরমভাবে লান্চিত হবে।
-বিদআতিদের চুড়ান্ত পরিনাম জাহান্নাম।

সমাজে সুন্নতের নামে প্রচলিত কিছু বিদআতঃ
-সন্মান করার নামে কদমবুচি করা।
-নুতন দোকান, বাড়ি, অফিস ইত্যাদি উদ্ভোধনকে কেন্দ্র করে কোরআন খতম, মিলাদ মাহফিল বা খতমে গাউছিয়া পড়া ।
-ছেলে বা মেয়ের পরীক্ষা, বিদেশ যাবার প্রাক্কালে, বিপদ থেকে রক্ষা বা আর্থিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কোরআন খতম করানো।
-খতমে শাবিনা পড়ানো।
-রাসুল(সাঃ)এর নির্দেশিত দরুদ ছাড়া অন্য দরুদ পড়া। (দুরুদে লাখি, দরুদে হাজারী, দরুদে মুকাদ্দাস, দরুদে নারীয়া, দরুদে মাহী, দরুদে মুজাদ্দেদিয়া, দরুদে কাদরিয়া, দরুদে চিশতিয়া, দরুদে নক্সাবন্দিয়া বা অন্য কোন দরুদ যা ব্যক্তিবিশেষ দ্বারা রচিত)
-রাসুল (সাঃ) এর উপস্থিতি মনে করে দাড়িয়ে দরুদ পড়া।
-ইস্তিন্জার ক্ষেত্রে ঢিলা বা টয়লেট পেপার দিয়ে পুরুষাংগ হাতে ধরে এদিক ওদিক হাটাহাটি কিংবা চল্লিশ কদম হাঁটা, মাটিতে জোরে জোরে পা মারা, এক উরু দিয়ে অন্য উরুতে চাপ দেয়া, যা ভদ্রতা,সভ্যতা, সুরুচি, দ্বীনী মর্যাদা ও লজ্জার বিপরীত।
-আযানের পূর্বে সালাত ও সালাম পেশ করা।
-নামায শুরুর পূর্বে ইন্নি ওয়াজ্জাতু পড়া ।
-নামায-রোজা ইত্যাদির নিয়াত মুখে উচ্চারন করা।
-নামাযের শেষে ইমামের নেতৃত্বে মুনাজাতকে আবশ্যিক মনে করা।
-কোন পীর বা অলির মায়ার সওয়াবের নিয়াতে জেয়ারত করা।
-রবিউসসানীর ১১ তারিখে ফাতেহা ইয়াজদহম পালন করা।
-সবে বরাত শবে মিরাজের বিশেষ সালাত আদায় করা।
-নারায়ে রিসালাত ও নারায়ে গাউসিয়া স্লোগান দেয়া।
-হজ্বের উদ্দেশ্যে বের হয়ে প্রথমে বাইতুল্লাহ না গিয়ে সরাসরি মদীনায় যিয়ারত করা।
-তসবিহয়ের চডা দিয়ে তাসবিহ গননা করা।
– কোরআন তেলাওয়াতের সময় মুখে-কানে হাত দিয়ে চেহারা বিকৃত করে তেলাওয়াত করা ও তেলাওয়াত শেষে সাদাকাল্লাহুল আজিম পড়া ।

লেখক : আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, তাকাফুল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।