একান্ত সাক্ষাতকারে পিপলু বিশ্বাস
‘গ্রাহকের স্বার্থ সংরক্ষণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স’

আদম মালেক:

বীমা খাতের সম্প্রসারণ ঘটলেও প্রশ্নবিদ্ধ সেবার মান। বীমা প্রতিষ্ঠান নিয়ে গ্রাহকদের পুঞ্জীভুত অভিযোগ দিন দিন বাড়ছে। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পিপলু বিশ্বাস।

 

জাতীয় অর্থনীতি বিষয়ক অনলাইন পত্রিকা অর্থবাংলাডটকমের সাথে একান্ত সাক্ষাতকারে বীমা শিল্পের চলমান অবস্থা, সংকট এবং উত্তরণের উপায় নিয়ে কথা হয়। আলোচনা হয় চতুর্থ প্রজন্মের বীমা প্রতিষ্ঠান ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড এর কর্মকান্ড নিয়ে। সাক্ষাতকার গ্রহণ করেছেন সিনিয়র রির্পোটার জনাব আদম মালেক।

পিপলু বিশ্বাস বলেন, উন্নত সেবাই আমাদের প্রতিশ্রুতি। আমরা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। গ্রাহকের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য আমরা মরিয়া হয়ে উঠেছি। গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষায় বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) থেকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যে গ্রাহকের স্বার্থ আগে দেখতে হবে। আইডিআরএর নির্দেশনা আর বীমা আইন মেনে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় বদ্ধপরিকর ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স। তিনি বলেন, আমরা আমানত বাড়াচ্ছি। গ্রাহকের মৃত্যু দাবি, মেয়াদোর্ত্তীণ দাবিসহ সকল প্রকার সুবিধা যথাসময়ে দিতে তৎপর ডায়মন্ড লাইফ।

বীমাখাতে কোভিডের প্রভাব ও কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন এই মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি বলেন, কোভিডের মধ্যে আমাদের ব্যবসা স্থবির হয়ে গিয়েছিল। এখন যেহেতু কোভিড সহনীয় পর্যায়ে চলে এসেছে সেহেতু গ্রাহকদের আমরা প্রিমিয়ামের টাকা জমা দেয়ার জন্য উদ্ধুদ্ধ করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য আমাদের সুযোগ করে দিয়েছে। আমরা সবাই ভ্যাকসিন নিয়েছি। এতে আমাদের সুবিধা হয়েছে। ভয়টা কেটে গেছে। মাঠে যাচ্ছি কর্মীদের আমরা উদ্বুদ্ধ করছি। আমরা গ্রাহকদের বলছি, আপনার সঞ্চয় করুন। সঞ্চয় এবং নিরাপত্তার জন্য বীমা করুন। যথাসময়ে বীমার প্রিমিয়ামের টাকা কোম্পানির অফিসে জমা করুন। বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আমাদের লেট ফি মওকুফ করে দিয়েছে। আমাদের হাতে এ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় আছে। এ সময়ে আমাদের যে লক্ষ্য আছে ব্যবসার জন্য সে লক্ষ্যে পৌঁছার চেষ্টা করছি।


পরিকল্পের বৈচিত্র্যের গুরুত্ব সর্ম্পকে তিনি অর্থবাংলাডটকমকে বলেন, বীমা খাতকে আকর্ষণীয় করতে হলে নতুন নতুন পরিকল্প আনতে হবে। বিশেষ করে সার্বজনীন স্বাস্থ্য বীমা এবং শিক্ষা বীমা। এসব বীমা জনপ্রিয় করতে পারলে সুফল পাওয়া যাবে। ২০১৯ সালের মাইক্রো ইন্স্যুরেন্স সামিটে এ বিষয়গুলো নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে।

যুগোপযোগী বীমা খাত গড়ে তোলার উপায় গভীর মনযোগের সঙ্গে দেখেছেন পিপলু বিশ্বাস। তিনি অর্থবাংলাডটকমকে বলেন, একুশ শতকের প্রজন্ম তথ্য প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল। তারা ঘরে বসেই সকল সেবা পেতে চায়। এই প্রজন্মের প্রতি লক্ষ্য রেখে আমাদের বীমা শিল্পকে তথ্যপ্রযুক্তি সমৃদ্ধ করা উচিত। গড়ে তুলতে হবে কাগজবিহীন বীমা পলিসি। বিশেষ করে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে সমস্ত ডকুমেন্ট পেপারলেস করতে পারব বলে আমার বিশ্বাস এবং এটি ডিজিটাল বীমা পলিসি গ্রহণকে আরো ত্বরান্বিত করবে।

বীমা দিবসের গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গে এই বীমা ব্যক্তিত্ব বলেন, আমরা খুবই গর্বিত ও আনন্দিত, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ১৯৬০ সালের ১ মার্চ আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে যোগদান করেন। তাই বীমা পেশায় বঙ্গবন্ধুর যোগদানের তারিখটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ২০২০ সাল থেকে ১ মার্চ সারা দেশে প্রথম বীমা দিবস উদযাপিত হয়। এ বছর দ্বিতীয়বারের মতো বীমা দিবস উদ্যাপিত হয়েছে। এই দিবস উদযাপনের মাধ্যমে বীমা নিয়ে সবার মনে যে অজ্ঞতা, অসচেতনতা, ভীতি ও অদুরদর্শিতা ছিল তা দুর হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস। স্বচ্ছতা তৈরি, দক্ষ জনবলের প্রতি অধিক গুরুত্ব আরোপ, সেবার ক্রমাগত মানোন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন গণমাধ্যমে বীমা নিয়ে বিশেষ পরিবেশনা নিশ্চিত করতে পারলে বীমার বার্তা আমরা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পারব। ডায়মন্ড লাইফ চায় দেশের বিকাশমান অর্থনীতির মাধ্যমে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে। এই খাত ভালো থাকলে দেশ এগিয়ে যাবে, জিডিপিতে বাড়বে অবদান। মানুষের আর্থিক ঝুঁিক নিরাপাত্তায় আরো শক্তিশালী হবে এই বীমা খাত। তবে এজন্য শিক্ষিত জনগোষ্ঠি গড়ে তোলা প্রয়োজন বলেও মত প্রকাশ করেন এই বিজ্ঞ বীমা ব্যক্তিত্ব।

পিপলু বিশ্বাস বলেন, বীমা খাতে সবচেয়ে বড় অভাব হলো দক্ষ জনশক্তির। এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে আমাদের সবাইকে পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে। বিশেষ করে দেশে একচ্যুয়ারীর সংখ্যা বাড়ানো দরকার, যা বাংলাদেশে নেই। এজন্য বীমা খাত সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি রাষ্ট্রকেও বিশেষ ভুমিকা নিতে হবে।

এই প্রসঙ্গে নিজ প্রতিষ্ঠান সর্ম্পকে বললেন এই তরুন বীমা ব্যক্তিত্ব। জানালেন, চতুর্থ প্রজন্মের প্রতিষ্ঠান ডায়মন্ড লাইফ দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনশক্তি তৈরীর পাশাপাশি তাদের যথাযথ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে সচেতন হয়ে কাজ করছে। এক ঝাঁক প্রশিক্ষিত তরুণ তৈরী করছে ডায়মন্ড লাইফ, যারা আগামীর বাংলাদেশের বীমা খাতের নেতৃত্ব দেবে। শিক্ষিত জনশক্তির অংশগ্রহণ বীমা খাতের জন্য অনেক বেশি গুরুত্ববহন করবে বলে মত দিয়েছেন তিনি।

পিপলু বিশ্বাস বলেন, গ্রাহক নিরাপত্তা এবং তাদের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বীমা খাতের জন্ম। আর একমাত্র সেবার মধ্য দিয়েই গ্রাহকের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সম্ভব হবো। আর শতভাগ গ্রাহক সেবায় কোটি মানুষকে নিয়ে একটি শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ বীমা পরিবার হতে স্বপ্ন দেখে ডায়মন্ড লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।