লোকসান থেকে মুনাফায় ফিরেছে বাটা সু

আগের হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) লোকসান করলেও চলতি ২০২২ হিসাব বছরের একই সময়ে মুনাফায় ফিরেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চামড়া খাতের বাটা সু কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড। মূলত কোম্পানিটি কভিড-১৯-এর প্রভাবে গত বছর ও তার আগের বছরের প্রথমার্ধে লোকসান গুনেছে। কিন্তু চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে কোম্পানিটির আয় ও কর-পরবর্তী নিট মুনাফা দুটোই আকর্ষণীয় মাত্রায় বেড়েছে। সর্বশেষ প্রকাশিত কোম্পানিটির দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে বাটা সুর আয় হয়েছে ৫২৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ আয় ছিল ৪০১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ১২৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বা ৩১ দশমিক ৫৮ শতাংশ। প্রথমার্ধে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে লোকসান ছিল ৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। তার আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ লোকসান ছিল ৭০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২৪ টাকা ৪১ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ২ টাকা ৪৪ পয়সা।

এদিকে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৩১৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ আয় ছিল ২১৭ কোটি ৬ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ২৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ মুনাফা ছিল ১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১৯ টাকা ৪১ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১ টাকা ১৫ পয়সা। ৩০ জুন ২০২২ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৭৪ টাকা ২৪ পয়সায়।

৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২১ হিসাব বছরের জন্য ২৫ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সুপারিশ করেছে বাটা সু কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ। এর আগে আলোচ্য হিসাব বছরের জন্য ৭৫ শতাংশ অন্তর্বর্তী নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য হিসাব বছরে বাটা সুর শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৫ টাকা ১ পয়সা। যেখানে আগের হিসাব বছরে লোকসান ছিল ৯৬ টাকা ৮৩ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ শেষে এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২৫২ টাকা ৩৩ পয়সায়। আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ২৭০ টাকা ৯ পয়সা।

২০২০ হিসাব বছরে লোকসান হওয়ার কারণে বাটা সু বিনিয়োগকারীদের শুধু ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। যেখানে আগের ২০১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ১২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিটেইনড আর্নিংসের ওপর ভিত্তি করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১২৫ শতাংশ অন্তর্বর্তী নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। ওই হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১০৫ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশও দেয় তারা। তারও আগে ওই বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের নিট মুনাফার ওপর অন্তর্বর্তীকালীন ২৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি। এ হিসাবে বাটা সু ২০১৮ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের মোট ৩৪৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। ২০১৭ হিসাব বছরে ১০৫ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ দেয়ার আগে ২৩০ শতাংশ অন্তর্বর্তী নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল বাটা সু।

১৯৮৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বাটা সু-এর বর্তমান অনুমোদিত মূলধন ২০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ১৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৩৩৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৭০ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক বাফিন নেদারল্যান্ডস (বিভি), ২০ দশমিক ৭৪ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারী ও বাকি ৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত বৃহস্পতিবার বাটা সুর শেয়ারের সর্বশেষ দর ছিল ৯২২ টাকা। এদিন শেয়ারটির সমাপনী দর ছিল ৯২৩ টাকা ৫০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ৬৪৮ টাকা ও ১ হাজার ৬ টাকা ৪০ পয়সা।