পা দিয়ে লিখেই পরীক্ষা দিচ্ছে অদম্য মানিক

জন্ম থেকেই দুই হাত নেই। তারপরেও সুস্থ স্বাভাবিক অন্যান্য শিক্ষার্থীর মত পা দিয়ে লিখে চলতি বছর জেএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মানিক রহমান।

ফুলবাড়ী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৬ নং কক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, একটি উঁচু বেঞ্চে বসে পা দিয়ে লিখে বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা দিচ্ছে ৬১৮০১৩ রোলধারী মানিক রহমান। পা দিয়ে লিখলেও অনেক শিক্ষার্থীর তুলনায় তার লেখা সুন্দর।

জানা গেছে, শারীরিক প্রতিবন্ধী মানিক রহমানের বাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামে। তার পিতা মিজানুর রহমান একজন ঔষধ ব্যবসায়ী। মা মরিয়ম বেগম উপজেলার রাবাইতারী স্কুল এন্ড কলেজের ইতিহাস বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক। পিতা-মাতার বড় ছেলে মানিক রহমান জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী।

জন্ম থেকেই তার দুটো হাত নেই, একটি পা অন্যটির চেয়ে অনেকাংশে খাটো। কিন্তু পড়াশোনায় কখনও পিছিয়ে যায়নি মানিক। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও পিইসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ সহ ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। শুধু পা দিয়ে লেখাই নয়, পা দিয়ে মোবাইল চালনো এবং কথা বলাসহ কম্পিউটার টাইপিং ও ইন্টারনেট ব্যবহারেও পারদর্শী মানিক রহমান। ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে সে।

মানিকের বাবা মিজানুর রহমান জানান, আমার দুই ছেলের মধ্যে মানিক বড়। জন্ম থেকেই তার দুটো হাত না থাকায় আমরা তাকে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়েছি। এজন্য আমার স্ত্রী মরিয়ম বেগমের অবদান অনেক বেশি। মানিক পিইসিতে ভাল রেজান্ট করেছে। ওর জন্য দোয়া করবেন সে যেন জেএসসিতেও ভাল রেজাল্ট করতে পারে।

ফুলবাড়ী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র সচিব কানাই লাল সেন জানান, মানিক রহমান অন্য শিক্ষার্থীদের মতই প্রতিটি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হওয়ায় তাকে বাড়তি ৩০ মিনিট দেওয়াসহ সকল সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে।