দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফা কমেছে জেপি মরগানের

চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) জেপি মরগানের মুনাফা ২৮ শতাংশ কমে গিয়েছে। মন্দার ঝুঁকিতে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক খাতও নানামুখী প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছে। মূল্যস্ফীতি মোকাবেলায় নীতিনির্ধারকরা সুদের হার বাড়িয়ে চলেছেন। এতে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির ভোক্তা ও বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। খবর এপি।

সম্পদের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম ব্যাংক জানিয়েছে, জুনে শেষ হওয়া প্রান্তিকে জেপি মরগানের মুনাফা ৮৬৫ কোটি ডলার বা শেয়ারপ্রতি ২ ডলার ৭৬ সেন্টে পৌঁছেছে। যেখানে গত বছরের এ সময়েও ব্যাংকটির মুনাফার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১৯৫ কোটি ডলার বা শেয়ারপ্রতি ৩ ডলার ৭৮ সেন্ট।

এদিকে জেপি মরগানের নির্বাহীরা বলছেন, অর্থনীতি এখনো ভালো অবস্থানে রয়েছে। প্রশ্ন হলো পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে। চলতি গ্রীষ্মের শুরুতে ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেমি ডিমন সতর্ক করেছিলেন, মূল্যস্ফীতি, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অন্য চ্যালেঞ্জগুলোর বিরুদ্ধে ফেডারেল রিজার্ভের লড়াইয়ের কারণে অর্থনীতিতে একটি সুনামি বয়ে যেতে পারে। সম্প্রতি একটি কনফারেন্সে জেমি ডিমন বলেন, আমি আমার দৃষ্টিভঙ্গি মোটেও পরিবর্তন করিনি। আমি যে নেতিবাচক দিকগুলো উল্লেখ করেছিলাম, ভবিষ্যতের ঝুঁকিগুলো এখনো একই রয়েছে, বরং ঝুঁকিগুলো আগের চেয়ে এখন অনেক কাছাকাছি।

তিনি আরো বলেন, আমি একটি গুরুতর মন্দার আশঙ্কা নিয়ে কথা বলছি না। তবে আমাদের এমন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে এবং গ্রাহকদের পরিষেবা দিতে হবে।

জেপি মরগানের এ ফল ওয়াল স্ট্রিটের পূর্বাভাসের নিচে রয়ে গিয়েছে। ফ্যাক্টসেটের জরিপে বিশ্লেষকরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, ব্যাংকটি শেয়ার প্রতি ২ ডলার ৮৯ সেন্ট মুনাফা করবে। তবে মুনাফার পরিসংখ্যান প্রকাশের পরে ব্যাংকটির শেয়ারদর ৩ দশমিক ৫ শতাংশ কমে ১০৮ ডলারে লেনদেন শেষ হয়েছে। তাছাড়া মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংকটির আয় প্রায় ৬০ শতাংশ কমে গিয়েছে। তবে স্টক ও বন্ড ট্রেডিং—উভয় ক্ষেত্রেই শক্তিশালী পারফরম্যান্সের কারণে বাজারের আয় ১৫ শতাংশ বেড়েছে। ভোক্তা ব্যাংকিং বিভাগের আয় ছিল ৩১০ কোটি ডলার। এ আয়ের পরিমাণও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৫ শতাংশ কম।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ফেডারেল রিজার্ভ মার্কিন অর্থনীতিকে মন্দার ঝুঁকিতে ফেলে দেয়া নিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ চলতি বছর ব্যাংক খাতের শেয়ারদরে কঠোর আঘাত করেছে। একটি মন্দা মানে অনেক মার্কিন নাগরিক চাকরি হারাবে এবং তাদের ঋণ মেটাতে হিমশিম খেতে হবে। এ ভয় ব্যাংকের লেনদেন থেকে গ্রাহককে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। ফলে উচ্চ সুদের হারের কারণে ব্যাংকগুলোর মুনাফা বাড়বে বলে মনে করা হলেও উল্টো ঘটছে।