ছাত্রীকে ধর্ষণ করে হত্যা, ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড

লক্ষ্মীপুরে রামগঞ্জে ২০১৮ সালের ২৩ মার্চ তৃতীয় শ্রেণীতে মাদ্রাসা পড়–য়া শিশু ছাত্রী নুরশেদ জাহান (৮) কে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ গুমের মামলায় শাহ আলম রুবেল (২৫) নামে এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, সংশোধিত ০৩ এর ৯(২) ধারায় সাক্ষ্য প্রমানে সন্দেহাতীতভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সিরাজুদ্দৌলা কুতুবী মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় জনাকীর্ণ লোকের উপস্থিতিতে আসামি শাহ আলম রুবেলের বিরুদ্ধে এ রায় দেন। একই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রুবেলের বিরুদ্ধে নগদ এক লাখ জরিমানা আদায়ের আদেশ দেন আদালত। উক্ত মামলায় ধর্ষিত শিশুর লাশ গুম করা ২০১ ধারায় অভিযুক্ত হওয়ায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী রুবেলের বিরুদ্ধে আরো চার বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালতের বিচারক।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে গলায় ফাঁসির রশিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য বিচারক উক্ত আদেশে উল্লেখ করেন। প্রাপ্ত আসামির পিতার নাম সিরাজুল ইসলাম। রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে নাজুমুদ্দিনের বাড়ী প্রকাশ কালু মেস্তরীর বাড়ি আসামির পৈতৃক বাড়ী। অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় জামিনে থাকা উক্ত মামলার অপর আসামি বোরহান উদ্দিনকে আদালত বেকসুর খালাশ দেন। মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। মামলার বাদী নিহতের মা রেহানা বেগম আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তার প্রতিক্রিয়ায় উচ্চ আদালতেও এ রায় যেনো বহাল থাকে। তিনি এ আকুতি জানান। নিহতের পিতা এরশাদ হোসেন কুয়েত প্রবাসে থেকেও মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। একই অনুভুতি জানান, নিহত শিশুর অপর আত্মীয় আকবর হোসেন। আদালতের স্পেশাল পিপি এ্যাডভোকেট আবুল বাশার মামলার বিস্তারিত বিবরণ মিডিয়া কর্মীদের কাছে তুলে ধরেণ।

মামলার বিররণে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৩ মার্চ শুক্রবার বেলা প্রায় ১১টার দিকে আসামি মো. শাহ আলম রুবেল মাদ্রাসা পড়ুয়া তৃতীয় ছাত্রী নুরশেদ জাহানকে প্রতিবেশী দণ্ডপ্রাপ্ত রুবেল ডেকে নিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর শিশুটিকে গলা টিপে হত্যার পর হাত পা ভেঙ্গে টাউজারের ব্যাগে ভর্তি করে নিজ ঘরে ষ্টিল আলমারীর ওপরে রেখে দেয়। পরে ২৬ মার্চ বস্তাবন্দি করে রামগঞ্জ ব্রাম্যপাড়া বৈষ্ণতলা ব্রিজের নীচে ফেলে দেয়। পরে লাশের পচা গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে ২৬ মার্চ রামগঞ্জ থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।

এদিকে শিশুটি না পেয়ে ২৪ মার্চ শিশুর মা রেহানা বেগম রামগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়রি দায়ের করেন।