কমনওয়েলথ ফাইন্যান্স মিনিস্টার্স মিটিংয়ের পরবর্তী সভাপতি অর্থমন্ত্রী

আগামী বছরের জন্য কমনওয়েলথ ফাইন্যান্স মিনিস্টার্স মিটিংয়ের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। মালয়েশিয়ার আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব ও ব্রুনাইয়ের সমর্থনে তিনি পরবর্তী সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। করোনা মহামারী মোকাবেলা করে দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে কমনওয়েলথভূক্ত দেশগুলোর সহযোগীতা চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, বর্তমান সঙ্কট মোকাবেলায় কমনওয়েলথ বাংলাদেশকে সহযোগীতা করতে পারে।

অর্থমন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের এই অর্জন অত্যন্ত গৌরব ও দেশের জন্য সম্মানের বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ মর্যাদার জন্য বাংলাদেশের সর্বস্তরের নাগরিকদের পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রী কমনওয়েলথ নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সভার সাইড লাইনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কমনওয়েলথ অর্থমন্ত্রীদের ভার্চুয়াল সভা হয়। ওই সভায় কমনওয়েলথভূক্ত ৫৪টি দেশের অর্থমন্ত্রী এবং উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিরা অংশ গ্রহণ করেন। এতে বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল। ওই সভায় তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অর্থমন্ত্রীর সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে ২০২২ সালে অনুষ্ঠেয় কমনওয়েলথ অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ তৈরি হলো বাংলাদেশের।

সভায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে গত এক দশকে গড়ে ৭.৪ শতাংশ অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে। এমনকি অপ্রত্যাশিত অভিঘাত কোভিড-১৯ মহামারিকালে গত বছর যেখানে বৈশ্বিক অর্থনীতি ৩ শতাংশ সংকোচন হয়েছে, তখনও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশ শীর্ষ পাঁচটি সহনশীল অর্থনীতির মধ্যে ছিল।’

তিনি আরও বলেন, গত মাসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে টেকসই উন্নয়ন নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আমাদের উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়েছে। কমনওয়েলথের একটি গৌরবময় অতীত আছে। ১৭৬৯ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বাষ্প ইঞ্জিন আবিষ্কারের মাধ্যমে প্রথম শিল্পবিপ্লবের যাত্রা, যা সত্যিই বিশ্ব অর্থনৈতিক উন্নয়নের শিখা জ্বালিয়েছিল। ১৭৭১ সালে সত্যিকারের কারখানা বলতে যা বোঝায়, সেটি প্রথম যুক্তরাজ্যের ডার্বিশায়ারের ক্রমফোর্ড নামক গ্রামে নির্মাণ হয়েছিল। সর্বজনবিদিত একটি সত্য হচ্ছে, সপ্তদশ শতাব্দীতে কমনওয়েলথভুক্ত ভারত উপমহাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ ছিল।

অর্থমন্ত্রী বলেন,সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আন্তকমনওয়েলথ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জ্ঞান, প্রযুক্তি ও উত্তমচর্চা শেয়ারের মাধ্যমে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো অধিকতর আর্থ-সামাজিক সমৃদ্ধি লাভ করতে পারে। ওই সভায় অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডার প্রধানমন্ত্রী গ্যাস্টন ব্রাউন সভাপতিত্ব করেন।

এতে কমনওয়েলথ সচিবালয় মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ডসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ব নেতারা এ সভায় টেকসই এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে ঋণ, বৈশ্বিক ন্যূনতম ট্যাক্স চুক্তি এবং কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে এর প্রভাব, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত হুমকি মোকাবিলায় ঋণ এবং কমনওয়েলথ ক্লাইমেট ফাইন্যান্স অ্যাক্সেস হাবসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর জোর দেন।